সমস্ত প্রশংসা মহামান্য আল্লাহর জন্য, যিনি আমাদের উত্তম কথা বলার দিকে আহ্বান করেছেন এবং এর বিনিময়ে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আল্লাহ বলেন,
“হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে ভয় করো এবং সঠিক কথা বলো।”
(সূরা আল-আহযাব: আয়াত ৭০)
ভদ্র, নম্র ও মিষ্টভাষী হওয়া — সুন্দর শব্দের ব্যবহার ও কোমল ভাষায় কথা বলা — বান্দাকে মর্যাদাবান করে তোলে এবং পরকালে সম্মানের মুকুট এনে দেয়।
জান্নাতবাসীদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,
“তাদেরকে পবিত্র বাণীর দিকে হেদায়েত করা হয়েছিলো।”
আরও বলেন,
“জান্নাতে তারা কোনো বেহুদা বা পাপের কথা শুনবে না, বরং শুধু শুনবে — ‘শান্তি, শান্তি।’”
(সূরা আল-ওয়াক্বিয়া: আয়াত ২৫-২৬)
আল্লাহ আরও বলেন,
“তুমি কি দেখনি, হে রসুল, কলিমায়ে তাইয়্যিবাহ (উত্তম বাণী) এক উত্তম বৃক্ষের মতো — যার মূল মজবুতভাবে প্রোথিত, আর শাখা-প্রশাখা আকাশ পর্যন্ত বিস্তৃত। সে তার রবের আদেশে সর্বদা ফল দেয়।”
(সূরা ইব্রাহিম: আয়াত ২৪-২৫)
প্রিয় ভাইয়েরা,
অশ্লীলতা, গালাগালি ও কটু কথা বলা অত্যন্ত ভয়ংকর পাপ — বিশেষ করে নিজের পিতা-মাতার প্রতি!
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
“নিজের মা-বাবাকে গালি দেওয়া বড় গুনাহ।”
সাহাবিরা জিজ্ঞাসা করলেন, “ইয়া রসুলাল্লাহ! সন্তান কিভাবে নিজের মা-বাবাকে গালি দিতে পারে?”
নবীজী বললেন, “যখন কেউ অন্যের মা-বাবাকে গালি দেয়, তখন প্রতিপক্ষও তার মা-বাবাকে গালি দেয়। এভাবেই সে নিজের মা-বাবাকে গালি দেয়।”
(সহীহ বুখারি ৫৯৭৩, সহীহ মুসলিম ৯০, হিলওয়াতুল আওলিয়া ৩/২০২)
অতএব সাবধান! অন্যের মা-বাবাকে গালি দিও না — কারণ তা নিজের মা-বাবার প্রতিই ফিরে আসে।
আল্লাহ বলেন,
“হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সঙ্গে থাকো।”
(সূরা আত-তাওবা: আয়াত ১১৯)
নবীজী বলেছেন,
“যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন ভালো কথা বলে, না হয় চুপ থাকে।”
(সহীহ বুখারি ৬০১৮, সহীহ মুসলিম ৪৭)
আল্লাহ বলেন,
“মানুষের মুখ দিয়ে কোনো কথা উচ্চারিত হলেই তার নিকটে উপস্থিত প্রহরী তা লিখে রাখে।”
(সূরা ক্বাফ: আয়াত ১৮)
তাই জিহ্বা সংযত রাখুন।
যে লেখক দুনিয়া থেকে বিদায় নেয়, তার লেখা পড়ে মানুষ তাকে স্মরণ করে। তাই এমন কিছু লিখে যান, যা দেখে পরকালে আপনি আনন্দিত হতে পারেন।
(আল আকদুল ফারিদ ২/৮৭, আল কাওকাবুল ওয়াহাজ শারহ সহীহ মুসলিম ২৬/৫৬০)
আমিরাতের নাগরিক সমাজ ভদ্র, নম্র, সচেতন ও দেশসেবায় সক্রিয় — এটি আল্লাহর এক বিশাল নেয়ামত। এ নেয়ামতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা ও শোকর আদায় করা প্রতিটি মুমিনের কর্তব্য।
আল্লাহ বলেন,
“হে নবী, আপনি আপনার প্রতিপালকের নেয়ামতসমূহের বর্ণনা দিন।”
(সূরা আদ-দোহা: আয়াত ১১)
নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
“কোনো ঈমানদার ব্যক্তি গালিগালাজকারী, নিন্দাকারী, অভিশাপদাতা বা কটুভাষী হতে পারে না।”
(সুনানে তিরমিজি ১৯৭৭)
আল্লাহ বলেন,
“যেসব বিষয়ে তোমরা জানো না, সে সম্পর্কে কিছু বলো না — এসব বিষয়ে পরকালে জিজ্ঞাসা করা হবে।”
(সূরা আল-ইসরা: আয়াত ৩৬)
অতএব, জ্ঞান ছাড়া ফতওয়া দেওয়া, দায়িত্বে গাফিল থাকা বা ইল্মবিহীন কথা বলা থেকে বিরত থাকা উচিত।
হে আল্লাহ! আমাদেরকে ক্ষমা করুন। আমাদের পিতা-মাতাকে ক্ষমা করুন এবং তাঁদেরকে জান্নাতুল ফিরদাউস দান করুন। আমিন।
খতিব: এম কিউ এম সাইফুল্লাহ মেহরুজ্জামান
শুজা বিন ওহাব সরকারি জামে মসজিদ, শারজাহ, সংযুক্ত আরব আমিরাত





























