সমস্ত প্রশংসা মহামান্য আল্লাহর জন্য — যিনি তাঁর দানশীলতায় অসীম। তিনি দানশীল বান্দাদের প্রতি দয়ার্দ্র, তাদের জন্য উত্তম প্রতিদানের অঙ্গীকার করেছেন এবং মানুষকে দান, খয়রাত ও ইহসানের পথে আহ্বান করেছেন।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন আল্লাহর সর্বাধিক প্রিয় বান্দা ও রাসূল।
প্রিয় ভাইয়েরা,
দান করা, ইহসান করা, সাহায্য ও সহযোগিতা করা মানব জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর মাধ্যমে আত্মা পবিত্র হয়, মন শান্ত হয়, অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফোটে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হয়।
আল্লাহ বলেন,
“তোমরা কল্যাণকর যা কিছুই করো না কেন, আল্লাহ সে সম্পর্কে অবগত আছেন। পাথেয় গ্রহণ করো, আর সর্বোত্তম পাথেয় হলো তাকওয়া।”
(সূরা আল-বাকারা: আয়াত ১৯৭)
আল্লাহর খুশির জন্য বিনিময়বিহীনভাবে সাহায্য করাই হলো দান বা সদকা।
আল্লাহ বলেন,
“তোমরা আল্লাহর পথে যা কিছু ব্যয় করো, তা তোমাদের কাছে ফিরে আসবে। আর তিনি সর্বোত্তম রিজিকদাতা।”
(সূরা সাবা: আয়াত ৩৯)
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
“প্রতিটি কল্যাণমূলক কাজই সদকা।”
(সহীহ বুখারি ৬০২১, সুনানে তিরমিজি ১৯৭০, মুসনাদে আহমদ ১৪৮৭৭)
তিনি আরও বলেছেন,
“দুই ব্যক্তির মধ্যে সুবিচার করা সদকা। কাউকে বাহনে উঠতে সাহায্য করা বা মালামাল তুলতে সাহায্য করা সদকা। একটি উত্তম কথা বলাও সদকা। রাস্তা থেকে ক্ষতিকারক বস্তু সরানোও সদকা।”
(সহীহ বুখারি ২৮৯১, সহীহ মুসলিম ১০০৯)
নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেছেন,
“আল্লাহর কাছে প্রিয় বান্দা তারা, যারা মানুষের উপকারে আসে। আর উত্তম আমল হলো — কোনো মুসলিমকে খুশি করা, তার কষ্ট দূর করা, কর্জ শোধে সাহায্য করা বা ক্ষুধার্তকে আহার করানো।”
(সিলসিলা সহীহা ৯০৬)
একদা নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দেখলেন কিছু লোক মানুষকে পানি পান করানোর জন্য কূপ খনন করছে। তিনি বললেন,
“কাজ করতে থাকো, এটি অত্যন্ত উত্তম কাজ। মানুষের ভিড়ের আশঙ্কা না থাকলে আমিও কূপে নেমে রশি কাঁধে নিতাম।”
(সহীহ বুখারি ১৬৩৫)
আল্লাহ বলেন,
“যে ব্যক্তি একজন মানুষের জীবন রক্ষা করে, সে যেন সমগ্র মানবজাতির জীবন রক্ষা করল।”
(সূরা আল-মায়িদাহ: আয়াত ৩২)
অতএব, আগুন, সমুদ্র বা যে কোনো বিপদ থেকে কাউকে রক্ষা করাও বড় সদকা।
আল্লাহ বলেন,
“যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য দান করে, অচিরেই সে সন্তুষ্ট হবে।”
(সূরা আল-লাইল: আয়াত ২১)
আল্লাহ আরও বলেন,
“যারা অন্তরের সংকীর্ণতা থেকে রক্ষা পেয়েছে, তারাই সফল।”
(সূরা আল-হাশর: আয়াত ৯)
আল্লাহ বলেন,
“তোমরা আল্লাহর পথে যা কিছু ব্যয় করো, তা তোমাদের অনুসরণ করবে (অর্থাৎ প্রতিদান নিশ্চিত)। তিনি সর্বোত্তম রিজিকদাতা।”
(সূরা সাবা: আয়াত ৩৯)
আল্লাহ আরও বলেন,
“আল্লাহর কাছে যা আছে, তাই উত্তম ও স্থায়ী। তোমরা কি অনুধাবন করো না?”
(সূরা আল-কাসাস: আয়াত ৬০)
দোয়া:
হে আল্লাহ! আমাদের সবাইকে দানশীল বানিয়ে দিন।
আমাদের সকল দান ও সদকা কবুল করুন।
আমাদের পিতা-মাতাকে ক্ষমা করুন এবং তাঁদেরকে জান্নাতুল ফিরদাউস দান করুন।
আমিন।
খতিব: এম কিউ এম সাইফুল্লাহ মেহরুজ্জামান
শুজা’ বিন ওয়াহাব সরকারি জামে মসজিদ, সাজ্জা, শারজাহ, সংযুক্ত আরব আমিরাত




























