সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া ২৩ নাবিক আগামী ২০ এপ্রিল দেশে ফিরতে পারেন। ১৯ এপ্রিল দুবাই পৌঁছতে পারে জাহাজটি। সেখান থেকে উড়োজাহাজে ২০ এপ্রিল আসবেন চট্টগ্রামে। চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে বারিক বিল্ডিং মোড়স্থ এমভি আব্দুল্লাহর মালিক প্রতিষ্ঠান দেশের স্বনামধন্য শিল্প প্রতিষ্ঠান কেএসআরএমের অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন প্রতিষ্ঠানের উপ মহাব্যবস্থাপক শাহরিয়ার জাহান রাহাত। ৩১ দিনের মাথায় জাহাজসহ নাবিকদের উদ্ধারের গল্প শোনান কেএসআরএমের এই উপ মহাব্যবস্থাপক।
শাহরিয়ার জাহান বলেন, মালিকপক্ষ বা আমরা সরাসরি জলদস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগ করিনি। যারা এটি নিয়ে কাজ করেন তাঁদের সাহায্য নিয়েছি। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে জাহাজসহ নাবিকদের উদ্ধার করা গেছে। জিম্মি নাবিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়েছে বলে জানান তিনি। ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ জিম্মি বাংলাদেশি এই জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ উদ্ধার অভিযান চালানোর পরিকল্পনাকেও নিরুৎসাহিত করা হয়।
শাহরিয়ার জাহান রাহাত বলেন, আমাদের কাছে নাবিকদের জীবনের নিরাপত্তার বিষয়টির গুরুত্ব ছিল। ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর পিছু নেওয়ার পর সরকারকে দ্রুত বিষয়টি অবহিত করি। ৩০ মিনিটের মধ্যে ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ এটির সঙ্গ ত্যাগ করে। এই জন্য প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান শাহরিয়ার জাহান রাহাত।
জাহাজের নিরাপত্তার ঘাটতির বিষয়েও উত্তর দেন শাহরিয়ার জাহান রাহাত। তিনি বলেন, ‘আমাদের জাহাজটি নিরাপদ দূরত্বে দিয়ে যাচ্ছিল। যেখানে গত এক দশকে কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। ৯০০ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে জাহাজটি চলাচল করছিল। সে জন্য জাহাজে গানম্যান ছিল না। তবে, এবার থেকে আমরা আরও সতর্ক অবস্থায় জাহাজ পরিচালনা করব।
সংবাদ সম্মেলনে কেএসআরএমের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান এসআর শিপিংয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মেহেরুল করিম বলেন, ১৩ বছর আগে আমাদের আরেকটি জাহাজ জাহানমনি জিম্মি হয়েছিল। তখন আমাদের জ্ঞানের অভাব ছিল। সে জন্য জাহাজটি উদ্ধারে সময় বেশি লেগেছিল। এমভি আব্দুল্লাহ জিম্মি হওয়ার পর,দ্রুত উদ্ধারে প্রপার ওয়েতে কাজ করেছি। জাহাজটি জিম্মি হওয়ার পর থেকে জাহাজের ভিসেটের মাধ্যমে জাহাজটির সব তথ্য তদারকি করেছি।মেহেরুল করিম বলেন,ডলারভর্তি ব্যাগ পাওয়ার ৮ ঘণ্টা পর এমভি আবদুল্লাহকে মুক্তি দেয় দস্যুরা।
প্রতিদিন নাবিকেরা কেমন আছে, তার একটি ভিডিও নিতেন জানিয়ে মেহেরুল করিম বলেন, আমরা জানতাম নাবিকেরা প্রতিদিন পরিবারের সঙ্গে কথা বলত। তারপরও আমরা নাবিকেরা কেমন আছে,সেটির ভিডিও নিতাম জলদস্যুদের কাছ থেকে। সর্বশেষ গত দুই দিন আগে আমাদের মধ্যে সমঝোতা হয়। তারপর সবকিছু আইন মোতাবেক করে, জিম্মিদের ছাড়াতে সক্ষম হই।
জেআই/
Discussion about this post