সংযুক্ত আরব আমিরাতে ‘মায়ের ভাষায় কথা বলি’ শীর্ষক ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ‘বাংলাদেশ প্রেসক্লাব’। রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে দেশটির শারজায় অনুষ্ঠানটিতে প্রধান অতিথি ছিলেন দুবাইয়ের বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল বিএম জামাল হোসেন।
দেশটিতে সর্বনিম্ন ৫ থেকে সর্বোচ্চ ৩৬ বছর পর্যন্ত বাংলাদেশ শিক্ষা বোর্ড ও সিবিএসই বোর্ডের অধীনস্থ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাংলা বিষয়ে পাঠদান করে আসছেন এমন ১০ জন বাংলাদেশি শিক্ষককে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
সম্মাননা প্রাপ্তরা হলেন- অধ্যাপিকা নুরুন নাহার হুদা, রহিমা ইসলাম, সুমনা দাস, অধ্যাপক এস এম আবু তাহের, আবু তাহের মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ, নাসরীন সুলতানা, শেখ কানিজ-এ-ফেরদৌস, রহিমা সেলিনা সিদ্দিকী, স্নিগ্ধা সরকার তিথী ও জুইঁয়েনা আক্তার।
শিবলী আল সাদিকের সভাপতিত্বে ও কামরুল হাসান জনির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ বিজ্ঞানী রেজা খান, বাংলাদেশ কনস্যুলেটের প্রথম সচিব (প্রেস) আরিফুর রহমান, শারজা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আহমেদ হোসাইন ও বাংলাদেশ সমিতি দুবাইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইয়াকুব সুনিক, বাংলাদেশ সমিতি শারজার সহ-সভাপতি মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন প্রমুখ। এসময় শারজাহ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ শিক্ষা বোর্ড ও সিবিএসই বোর্ডের অধীন ১১ টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক এবং বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কনসাল জেনারেল বিএম জামাল হোসেন বলেন, ‘মাতৃভাষার জন্য জীবন উৎসর্গ করা জাতির কাছে ভাষা গুরুত্বপূর্ণ হওয়াটাই স্বাভাবিক। আর এই ভাষা দূরপরবাসে বেড়ে ওঠা শিক্ষার্থীদের কাছে যারা পৌঁছে দিচ্ছেন তাদের সম্মান জানিয়ে বাংলাদেশ প্রেসক্লাব একটি মহৎ কাজ করেছে৷ তা ছাড়া আঞ্চলিক ভাষায় যে বৈচিত্র্য তারা তুলে ধরেছে এটিও প্রশংসনীয় কাজ।’ এ সময় তিনি বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ও প্রবাসীদের দুবাই ও উত্তর আমিরাতে আন্তর্জাতিক মানের একটি বাংলাদেশি স্কুল প্রতিষ্ঠা ও শিশুকিশোরদের জন্য বাংলা ভাষা চর্চা কেন্দ্র চালু করতে বাস্তবমুখী ও সাহসী উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান।
এর আগে অনুষ্ঠানে বাংলা ভাষা চর্চায় উৎসাহিত করতে ও আঞ্চলিক ভাষার মর্যাদা রক্ষায় বিশেষ পর্ব পরিচালনা করা হয়। যেখানে দেশের আটটি বিভাগের আঞ্চলিক ভাষাসহ প্রায় বিলুপ্ত উপভাষায় নিজ অঞ্চলের ভাষার বৈচিত্র্য ও আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন প্রবাসীরা। এতে ঢাকার কুট্টি ভাষায় রেজা খান, চাটগাঁইয়া ভাষায় মোস্তফা মাহমুদ, সিলেটি ভাষায় হাজী শফিকুল ইসলাম, রংপুরী ভাষায় স্নিগ্ধা সরকার তিথী, মোমেনশিঙ্গা ভাষায় উত্তম কুমার সরকার, বরিশাইল্যা ভাষায় সাথী আক্তার প্রিয়া, খুলনাইয়া ভাষায় শাহীদ ইসলাম, বরেন্দ্রী উপভাষায় সানজিদা আঞ্জুম শিমুল ও নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় কামাল হোসাইন সুমন নিজের অঞ্চলকে তুলে ধরেন।
এ ছাড়া অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন কবি জামাল হোসেন, আবিদা হোসেন, শিবলী আল সাদিক, এস এম শাফায়েত, রাহবার আবদুল্লাহ শিবলী, রুহিন হোসেন ও সাকিয়া সিদ্দিকা জেরিন।
জেআই/
Discussion about this post