মালয়েশিয়া নতুন করে কলিং ভিসায় ২৪ লাখ কর্মী নিয়োগ করবে এরকম একটি খবরে কিছুটা বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। কুয়ালামপুরে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার বলেছেন, ২৪ লাখ কলিং ভিসার খবরটি পুরোপুরি সঠিক নয়। মালয়েশিয়ার বিজনেস টুডেসহ সেখানকার গণমাধ্যমে উদ্ধৃত করে খবরটি বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশ করা হয়েছে। ওই খবরে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়া সরকার বিদেশি শ্রমিক নিয়োগে কলিং ভিসার কোটা উন্মুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া চালু থাকবে।
বিষয়টি মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতোশ্রী সাইফুদ্দিন নাসিউশন ইসমাইল নিশ্চিত করেছেন।জনশক্তি রপ্তানি সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, মালয়েশিয়ায় মোট জনসংখ্যার ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বিদেশি শ্রমিক নিয়োগ করে থাকে। ওই দেশের জনসংখ্যার হিসাবে ২৪ লাখ ৭৬ হাজার বিদেশে শ্রমিক নিয়োগ করতে পারে। বর্তমানে মালয়েশিয়ায় প্রায় ২০ লাখের মতো বিদেশি শ্রমিক কর্মরত রয়েছে। তাদের সংখ্যা বাদ দিলে সাড়ে চার লাখের মতো বিদেশি শ্রমিক সোর্সকান্ট্রিগুলো (১৪টি সোর্স কান্ট্রি) থেকে নেওয়ার সুযোগ থাকে। আবার অনেক শ্রমিক মালয়েশিয়া থেকে ভিসা বাতিল করে চলে আসে। ওই সংখ্যা নতুন করে কলিং ভিসার সংখ্যায় যুক্ত হয়। সবমিলিয়ে মালয়েশিয়ায় সোর্স কান্ট্রিগুলো থেকে ৫-৬ লাখ শ্রমিক নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সংখ্যার মধ্যে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বাংলাদেশের জন্য খোলা হলে তার একটি অংশ বা কোটা বাংলাদেশ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জনশক্তি রপ্তানি সংশ্লিষ্টদের মতে ওই সংখ্যা বছরে দুই থেকে আড়াই লাখ পর্যন্ত হতে পারে।এর আগে গত মঙ্গলবার দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতোশ্রী সাইফুদ্দিন নাসিউশন ইসমাইল জানান, দেশটিতে কৃষি, বাগান, খনিজখাতসহ মোট ১৩টি উপখাতে বিদেশি শ্রমিক নিয়োগ করা হবে। এর মধ্যে সার্ভিস সেক্টরে হোলসেল অ্যান্ড রিটেল, ল্যান্ড ওয়্যারহাউস, সিকিউরিটি গার্ডস, মেটাল অ্যান্ড স্ক্র্যাপ ম্যাটেরিয়ালস, রেস্তোরাঁ, লন্ড্রি, কার্গো ও বিল্ডিং ক্লিনিং খাতে কর্মী নেওয়ার সুযোগ থাকবে। তিনি আরও বলেন, নির্মাণ খাতে নিয়োগ কেবল সরকারি প্রকল্পের জন্য সীমাবদ্ধ থাকবে। অন্যদিকে উৎপাদন বা ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে মালয়েশিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এমআইডিএ) অনুমোদিত নতুন বিনিয়োগ প্রকল্পগুলোকে। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পরিষ্কার করে জানান, এবারের কলিং ভিসা বা বিদেশি শ্রমিক নিয়োগের আবেদন শুধু খাতভিত্তিক অফিসিয়াল এজেন্সির মাধ্যমেই করা যাবে। আগের মতো কোনো এজেন্ট বা সরাসরি নিয়োগকর্তা স্বাধীনভাবে আবেদন করার সুযোগ পাবেন না। আবেদন যাচাইবাছাই শেষে অনুমোদন দেবে ফরেন ওয়ার্কার্স টেকনিকাল কমিটি এবং পরে জয়েন্ট কমিটি।
Discussion about this post