চাঁদা না পেয়ে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে এক ইতালিপ্রবাসীকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে সোমবার ভুক্তভোগী মাসুম শেখের স্ত্রী পলি আক্তার বাদী হয়ে রাজবাড়ীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বালিয়াকান্দি আমলি আদালতে মামলা করেছেন। এতে বালিয়াকান্দি উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মশিউল আযম চুন্নুসহ আটজনকে আসামি করা হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে বালিয়াকান্দি থানাকে এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছেন।মামলার অন্য আসামিরা হলেন– খন্দকার মশিউল আযম চুন্নুর ছেলে ছাত্রদল নেতা খন্দকার শফিউল আজম শিবলু, খন্দকার শোভন আরেফিন, নাজমুল হাসান বিপু, শ্রমিক দল নেতা সহেল শেখ, মো. নান্নু বিশ্বাস, বালিয়াকান্দি ইউপি সদস্য ও বিএনপি নেতা মো. মহসীন খান, রায়পুর গ্রামের উজ্জ্বল দাস।মামলার বাদী পলি আক্তার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা পদে কর্মরত। মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, তাঁর স্বামী মাসুম শেখ জীবিকার তাগিদে ২০০৭ সালে ইতালি যান। তিনি (পলি) বালিয়াকান্দি কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এ সময় ছাত্রদল নেতা খোন্দকার শফিউল আজম শিবলু তাকে উত্ত্যক্ত শুরু করেন। এ বিষয়ে থানায় মামলা করেন। পরবর্তীতে তিনি বদলি হয়ে ফরিদপুরে চলে যান। মাসুম শেখ সম্প্রতি ইতালি থেকে দেশে ফেরেন।বাদীপক্ষের অভিযোগ, গত ১৫ আগস্ট (শুক্রবার) মাসুম শেখ বালিয়াকান্দিতে জুমার নামাজ পড়ে বাবার কবর জিয়ারত করে ফিরছিলেন। পথে চুন্নু, তাঁর ছেলে শিবলুর নেতৃত্বে কয়েকজন ব্যক্তি তাঁর কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। অস্বীকার করায় মাসুমকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে। থানা পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনি ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
এদিকে আজ সোমবার দুপুর ১২টায় রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে খন্দকার মশিউল আযম চুন্নুসহ অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার দাবিতে মানববন্ধন হয়। বালিয়াকান্দির সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে মাসুম শেখ, তাঁর স্ত্রী পলি আক্তার, জিএম মোর্শেদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
বক্তারা অভিযোগ করেন, গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে আসামিরা চাঁদাবাজি, দখলবাজি, টেন্ডারবাজি, বালু মহাল দখলসহ এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে আসছেন। এলাকার অসহায় মানুষের ওপর অবৈধভাবে প্রভাব বিস্তার করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডও পরিচালনা করছেন তারা। এসব অভিযোগ পেয়ে যৌথবাহিনী তাদের গ্রেপ্তার করেছিল। কিন্তু কারামুক্ত হয়ে তারা আবারও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বিএনপি নেতা মশিউল আযম চুন্নু দাবি করেন, ‘আওয়ামী লীগের আমলে মাসুম শেখ আমার কাছ থেকে আট লাখ টাকা নিয়েছিল। তখন আমার নামে মিথ্যা মামলা করেছিল। এছাড়া অনেক অপরাধ করেছে। এসব কারণে আমার লোকজন তাকে (মাসুম শেখ) মেরেছে।’ মামলার বাদীর সঙ্গে তাঁর তিন বছর ধরে দেখা হয় না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রাজবাড়ী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট লিয়াকত আলী বাবু বলেন, ইতালিপ্রবাসী মাসুম শেখের স্ত্রী বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেছেন বলে শুনেছেন। দলীয় পদ না থাকায় ওই নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছেন না। বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতাদের জানাবেন।
Discussion about this post