সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য । যিনি তোমাদের মধ্যে থেকে তোমাদের স্ত্রীদেরকে সৃষ্টি করেছেন তোমাদের শান্তির জন্য এবং তোমাদের মধ্যে মহব্বত ও রহমত ঢেলে দিয়েছেন ।
অনন্ত অসীম দয়া ও অনুগ্রহ নাজিল হোক মহানবী সাঃ, তাঁর পরিবার রাঃ, তাঁর সাহাবীগণ রাঃ, তাবেঈনগণ রাঃ সহ সমগ্র মুসলিম জাতির উপর ।
একদা ১১ জন নারী সমবেত হয়ে প্রত্যেকে নিজ নিজ স্বামীর বর্ণনা দিচ্ছিলেন । সে গোল বৈঠকে একজন জ্ঞানী গুণী রমনী উপস্থিত ছিলেন । তিনি বললেন ‘ আমার স্বামী অত্যন্ত ভালো মানুষ । তিনি উদার । আমাকে খুব বেশী ভালোবাসেন । আমার জন্য সবকিছুই ব্যয় করেন ইত্যাদি ইত্যাদি । তার নাম ছিলো উম্মে জারা ।
মা আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা ঐ মহিলার স্বামী প্রেম ও ভক্তি ভালোবাসার কথা মহানবী সাঃ ‘র কাছে তুলে ধরলেন ।
জবাবে প্রিয় রসুল সাঃ বলেন “ আমি তোমার জন্য আবু জারা সদৃশ তার স্ত্রীর জন্য ।” এরপর মা আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বললেন ইয়া রসুলাল্লাহ ! আপনার জন্য আমার মা বাবা উৎসর্গ হোক । আপনি আমার জন্য আবু জারা অপেক্ষা অধিক উত্তম ।”
ছহীহুল বোখারি
ছহীহ মুসলিম
তাবরানী ২৬৯
মহান আল্লাহ পূণ্যবতী নারীদের ব্যাপারে বলেন “ নেককার নারীরা হলেন বিনয়ী চক্ষুর আড়ালে নিজেদেরকে হেফাজতকারীনি যা’ আল্লাহ হেফাজত করেন ।”
সূরা আন নিসা ৩৪
*** প্রিয় বোনেরা ! একজন স্বামী পরিবারের জন্য বড় সনদপত্র । স্বামী ছাড়া একটি পরিবার অচল বললেই চলে । একজন স্বামী পরিবারের জন্য সমস্ত কষ্ট ভোগ করে নেন । সবকিছু উজাড় করে দেন । স্বামীর প্রতি কৃতজ্ঞ হোন । তার সংগে সদাচরণ করুন । তাঁকে কষ্ট দেবেন না ।
মহানবী সাঃ বলেছেন “ যে ব্যক্তি মানুষের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে অক্ষম, সে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে অক্ষম ।”
সুনানে আবু দাউদ ৪৮১১
*** মহানবী সাঃ আরো বলেছেন “ স্বামীর প্রতি অকৃতজ্ঞ স্ত্রীর দিকে আল্লাহ তাকাবেন না ।”
আল মুসতাদরাক ২৭৭১
স্বামী স্ত্রী উভয়ে উভয়ের সংগে শেয়ার করবেন । একটি সুন্দর পরিবার গঠনে উভয়কে এগিয়ে আসতে হবে ।
পারস্পরিক ঝগড়া বিস্ফোরণ ঘটায় ।
ছহীহুল বোখারি
ছহীহ মুসলিম
মহানবী সাঃ বলেন “ জান্নাতি নারী হলো যারা অধিক সন্তান জন্ম দেয় এবং স্বামী কষ্ট পেলে তার হাতে হাত রেখে বলে প্রিয়তম ! তুমি সন্তুষ্ট না হওয়া পর্যন্ত আমি শান্তিতে থাকতে পারিনা ।”
সুনানে নাসাঈ ৯০৯৪
স্বামী স্ত্রী উভয়ে মিলে সুন্দর দাম্পত্য জীবন গড়ে তুলুন । অন্যদের দিকে তাকাবেন না । স্বামীর অর্থনৈতিক কষ্ট অনুধাবন করুন ।
মহানবী সাঃ বলেছেন “ তোমরা নিজেদের উপরের দিকে তাকাবেনা বরং তোমাদের নীচের দিকে তাকাও । তোমাদের উপর আল্লাহর নেয়ামতের অবাধ্যতা করোনা ।”
ছহীহ মুসলিম ২৯৬৩
স্বামী স্ত্রীর মধ্যে মান অভিমান থাকবে । এটাও ভালোবাসার বন্ধনকে সূদৃঢ় করে ।
মহানবী সাঃ বলেন “ হে আয়েশা ! তুমি আমার উপর কখন অভিমান করো তা’ আমি জানি । মা আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বললেন কিভাবে জানেন ? নবীজী সাঃ বললেন যখন তুমি আমার প্রতি খুশি থাকো তখন তোমার মুখ দিয়ে বের হয় লা ওয়া রব্বি মুহাম্মদ । পক্ষান্তরে তুমি যখন আমার সাথে কোন কারণে অভিমান করে বসো তখন তোমার মুখ দিয়ে বের হয় লা ওয়া রব্বি ইব্রাহিম । এবার মা আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বললেন আপনি সঠিক বলেছেন ইয়া রসুলাল্লাহ । আমি কেবল আপনার নামটাই নিইনি তখন । এ আর কি । “
ছহীহুল বোখারি
ছহীহ মুসলিম
প্রিয় ভাই ও বোনেরা ! স্বামী স্ত্রী উভয়ে উভয়ের প্রতি দায়িত্বশীল হলে এবং পারস্পরিক ভালোবাসার সম্পর্ক মজবুত করা হলে পরিবারটি হয়ে উঠবে সোনায় সোহাগা ।
ইয়া আল্লাহ ! আমাদের পরিবারগুলোতে শান্তি বর্ষণ করুন । আমাদের স্ত্রীদের ক্ষমা করে দিন ।
আমাদের মা বাবাদেরকে মাফ করে দিন এবং তাদেরকে জান্নাতুল ফিরদাউস দান করুন। আমিন ইয়া রব ।
Discussion about this post