দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেছেন, পতিত ফ্যাসিস্ট ও গণহত্যাকারী হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করতে হবে। সব গুম ও খুনের জন্য তাকে আইনানুযায়ী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনার প্রায় ১৬ বছরের শাসনামলে বিরোধী মতের বহু মানুষকে জেলখানায় হত্যা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন- নাসির উদ্দিন পিন্টু, দেলোয়ার হোসেন সাঈদী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুর রহিম।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী স্মৃতি ফাউন্ডেশনের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, নাসির উদ্দিন পিন্টু হত্যাকাণ্ডের বিচার হওয়া দরকার। এই তদন্তে ডাক্তারদেরও শামিল করতে হবে। ডাক্তার ছাড়া এ তদন্ত হবে না। তখন যেসব ডাক্তাররা ছিল তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। দ্বিতীয়জন দেলোয়ার হোসেন সাঈদী, তার মৃত্যুরও তদন্ত হওয়া উচিত। তৃতীয়জন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুর রহিম। প্রচণ্ড দেশপ্রেমিক ও জাতীয়তাবাদী এবং বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন তিনি। তাকে আইসিইউতে অক্সিজেন নাজাল বন্ধ করে হত্যা করা হয়েছে; তথ্যপ্রমাণ রয়েছে।
মাহমুদুর রহমান বলেন, সাংবাদিকদের অবিসংবাদিত নেতা রুহুল আমিন গাজী ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। এমন ক্যানসার আক্রান্ত মানুষকে বিনা অপরাধে ভুয়া মামলা দেখিয়ে জেলখানায় পাঠানো হয়। দেড় বছর আটকে রাখা হয়। এ সময় তাকে কোনো চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। এর ফলে পরবর্তী সময়ে ধুকে ধুকে তাকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে হয়। তিনি বলেন, রুহুল আমিন গাজীর হত্যাকাণ্ডের জন্যও ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে দেশে এনে বিচার করতে হবে। এ জন্য বর্তমান সরকারের কাছে আমি বিচারও দাবি করছি। এই সরকার যদি বিচার না করে, তবে পরে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হয়ে যে সরকার আসবে, সেই সরকারের কাছে এসব হত্যার বিচার চাইবো। যতগুলো হত্যাকাণ্ডের জন্য হাসিনার বিচার হবে, সে রকম রুহুল আমিন গাজীকে হত্যা করার অপরাধেও তার বিচার করতে হবে।
হাসিনাকে দেশে এনে বিচার করতে হবে এ কথা উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান বলেন, তিতাস নদীকে হত্যা করে ভারতীয় প্রভুদের খুশি করার জন্য হাসিনা সেখানে রাস্তা তৈরি করেছিল। এর প্রতিবাদে আমরা শেরাটন পর্যন্ত লংমার্চ করেছিলাম। সেই লংমার্চে কোদাল নিয়ে প্রতীকীভাবে বাঁধ কেটে দিয়েছিলাম। এটা এক ধরনের চ্যালেঞ্জ ছিল। আমরা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেছিলাম, বেঁচে থাকতে ইন্ডিয়া ভ্যাটেনরিকে বাংলাদেশে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে দেবো না। আলহামদুলিল্লাহ আজকে ইয়াং জেনারেশন আমাদের স্বপ্ন সফল করেছে। তারা জীবন দিয়ে ফ্যাসিস্টকে পরাভূত করেছে এবং ভারতীয় এজেন্টদের পরাজিত করেছে। এর সুফল কার্যকর রাখার জন্যই আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন— বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক আবদাল আহমেদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি শহীদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক খুরশিদ আলম, ইংরেজি দৈনিক নিউ নেশন’র সম্পাদক মোকাররম হোসেন প্রমুখ।
Discussion about this post