মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর জন্য সমস্ত প্রশংসা । তিনি উত্তম চরিত্র ও রিজিক বন্টন করেন । দেয়ার ক্ষেত্রেও ইনসাফ করেন ।
পরিপূর্ণ রহমত ও বরকত নাজিল হোক শেষ নবী মুহাম্মদ সাঃ, তাঁর পবিত্র পরিবার রাঃ, সাহাবীগণ রাঃ, তাবেঈনগণ রাঃ সহ সকল মুসলমানদের উপর । আল্লাহপাক অন্তরের রাজ সম্পর্কে সর্বজ্ঞ ।
সূরা আল্ মায়েদাহ ৭
আল্লাহ বলেন “ সেই সফলকাম, যে ব্যক্তি নিজের আত্মাকে পরিশুদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছে । পক্ষান্তরে সেই ব্যর্থ, যে ব্যক্তি নিজের আত্মাকে কলুষিত করেছে ।”
সূরা আশ শাম্স ৯-১০
মানবজীবনে অন্যতম মারাত্মক ব্যাধি হলো “ হিংসা !” অর্থাৎ কারো কল্যাণ বর্দাশ্ত করতে না পারা ! কারো ভালো ও তার উপর দানকৃত নেয়ামতের ধ্বংস কামনা করা ! কারো উন্নতি সহ্য না হওয়া !
এটা একটি মারাত্মক রোগ ! হিংসা হিংসুককে বর্বাদ করে দেয় ! দুই জনের মধ্যে পারস্পরিক শত্রুতা সৃষ্টি করে !
মনে আছে সাইয়্যিদুনা ইউছুফ আঃ’র প্রতি তাঁর সৎ ভাইদের প্রতিহিংসার কাহিনী ? যা’ আল্লাহ তুলে ধরেছেন সূরা ইউছুফে ।
“ যখন তারা বলেছিলো ইউছুফ ও তার ভাই বাবা’র কাছে আমাদের চেয়েও অধিক প্রিয় ! আমাদের পিতা সুস্পস্ট ভুলের মধ্যে আছেন ! তোমরা ইউছুফকে হত্যা করো অথবা কোথাও ফেলে দাও ! তা’হলে তোমাদের প্রতি বাবা’র সুদৃষ্টি থাকবে এবং তোমরা উত্তম সম্প্রদায়ে পরিচিতি পাবে !”
সূরা ইউছুফ ৮-৯
হিংসা থেকে আমাদের রসুল সাঃও রক্ষা পায়নি । আর তাই আল্লাহ তাঁকে শিখিয়েছেন “ ওয়া মিন শাররি হাসিদিন ইজা হাসাদ ।” অর্থাৎ হে নবী সাঃ ! বলুন ইয়া আল্লাহ ! হিংসুকের হিংসা থেকে আমি আশ্রয় চাই ।”
সূরা আন নাস “ শেষ আয়াত “
এ কারণেই মহানবী সাঃ বলেছেন “ তোমরা পরস্পর হিংসা করোনা ।”
ছহীহ মুসলিম ২৫৫৯
মহানবী সাঃ আরো বলেন “ মানুষ ততোক্ষণ পর্যন্ত কল্যাণের উপর থাকবে, যতোক্ষণ পর্যন্ত কেউ কাউকে হিংসা করবেনা ।”
তাবরানী ৮১৫৭
সাইয়্যিদুনা আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাঃ বলেন “ আল্লাহর নেয়ামত সমূহের সাথে শত্রুতা করোনা । “ তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো “ আল্লাহর নেয়ামত সমুহের সাথে কে দুশমনি করে ?” তখন তিনি এ আয়াতটি পড়েন “ আল্লাহপাক তাদের উপর নিজ অনুগ্রহে যা’ দান করেছেন, তার উপর মানুষ হিংসা করে ।”
সূরা আন নিসা ৫৪
জ্বী হ্যাঁ । এরাই মানুষের উপর দান করা নেয়ামত দেখে হিংসা করে এবং এটাই আল্লাহর নেয়ামত সমূহের সাথে শত্রুতা ।”
شرح النووي علي مسلم ٩٧/٦
সম্পদের লোভে চালাকী করা !
সূরা আল্ আহযাব ১৯
এই জাতীয় হিংসা থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় হলো “ নিজের কাছে যা আছে, তাতে সন্তুষ্ট থাকা । বরং যার কাছে অধিক নেয়ামত দেখা যাবে, তার জন্য দোয়া করা ।
মহানবী সাঃ বলেছেন “ কারো নিকট নেয়ামত অধিক দেখতে পেলে তার বারাকাহ বৃদ্ধির জন্য দোয়া করো ।”
সুনানে ইবনে মাজাহ ৩৫০৯
তাঁর জন্য দোয়া করার অভ্যাস গড়ে উঠলে হিংসা বিলুপ্ত হয়ে যাবে ।
সাইয়্যিদুনা ইউছুফ আঃ’র সৎ ভাইয়েরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চেয়েছেন । তারা বলেছিলেন “ হে আমাদের পিতা ! আমাদের গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন । আমরা অবশ্যই গুনাহগার ।”
সূরা ইউছুফ ৯৭
ভায়েরা সবাই আল্লাহর কসম খেয়ে বলেছিলেন “ হে ইউছুফ ! আল্লাহ তোমাকে আমাদের সকলের উপর মর্যাদা দান করেছিলেন । আমরাই অপরাধী ।”
সূরা ইউছুফ ৯১
মহানবী সাঃ বলেছেন “ তোমাদের কেউই ততোক্ষণ পর্যন্ত ঈমানদার হতে পারবেনা, যতোক্ষণ না তোমাদের ভাইদের জন্য তাই পছন্দ করবে, যা নিজের জন্য পছন্দ করো ।”
ছহীহুল বোখারি
ছহীহ মুসলিম
আল্লাহ বলেন “ চক্রান্ত চক্রান্তকারীকেই ঘিরে ধরে ।”
সূরা ফাতির ৪৩
অর্থাৎ হিংসা হিংসুককেই শেষ করে দেয় ।
মহানবী সাঃ বলেছেন “ নেয়ামত লাভকারী লোকদের উপর হিংসুটে মানুষ থাকে ।”
তাবরানী ২৪৫৫
তোমাদের মধ্যে আল্লাহ যাদেরকে প্রাধান্য দিয়েছেন, তার লোভ করোনা ।বরং আল্লাহর কাছে করুণা কামনা করো ।”
সূরা আন নিসা ৩২
ইয়া আল্লাহ ! আমাদেরকে হিংসা প্রতিহিংসা থেকে হেফাজত করুন । রিজিক রহমত দিয়ে আমাদের জীবন ভরিয়ে দিন । আমিন ।
Discussion about this post