সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজায় মোহাম্মদ মুনতাসির (৭) নামে এক বাংলাদেশি শিশু স্কুলে যাওয়ার সময় গাড়িতে আটকা পড়ে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গেছে। দেশটিতে সোমবার এ ঘটনা ঘটে। এনিয়ে আমিরাতের জাতীয় দৈনিক খালিজ টাইমস ও গালফ নিউজে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ইবেন সীনা স্কুলের ছাত্র মুনতাসিরকে তার অভিভাবকরা সোমবার সকালে শারজাহ জুলেখা হাসপাতালের পেছনে তাদের বাসা থেকে আরো সাতটি শিশুসহ নিয়মিত কার লিফট প্রদানকারী এক মহিলার গাড়িতে তুলে দেন। গাড়ি স্কুলে পৌঁছালে অন্যান্য শিশুরা নেমে পড়লেও মুনতাসির ঘুম থাকায় গাড়ি থেকে নামেনি। এ অবস্থাতেই মহিলা ফিরে আসেন। দীর্ঘ প্রায় সাত ঘণ্টা গাড়ির দরজা জানালা বন্ধ থাকায় মুনতাসির অক্সিজেনের অভাবে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে গাড়িতে নিস্তেজ হয়ে পড়ে থাকে। পরে যথারীতি মহিলা বিকাল ৩টার দিকে স্কুল থেকে অন্যান্য বাচ্চাদের আনতে গেলে মুনতাসিরের নিথর দেহ তার চোখে পড়ে। এদিকে শিশু মুনতাসিরের মা সন্তানের প্রিয় খাবার রান্না করে অপেক্ষায় ছিলেন। তিনি সন্তানের মুখে খাবার তুলে দেয়ার বদলে পেলেন তার লাশ।
পুলিশ গাড়ির ড্রাইভার মহিলাকে আটক করে ওয়াসিত পুলিশ স্টেশনে নিয়ে যায়। মঙ্গলবার (৭ মে) যাবতীয় তদন্ত বাদ আছর শারজায় তার লাশ দাফন করা হয়েছে।
মুনতাসিরের বাবা ইউএইতে কর্মরত প্রকৌশলী মোহাম্মদ রিয়াজ গ্রেফতারকৃত কার লিফট প্রদানকারী মহিলা ড্রাইভারকে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সম্পূর্ণরূপে ক্ষমা করে দেন। ফলে মহিলাকে আদালাত কারাগার থেকে মুক্তি দিয়ে দেন। আমিরাতের কোন প্রবাসীর ইতিহাসে এটা প্রথম ঘটনা ।
পুলিশ ডিপার্টমেন্ট বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। শিশুটির বাবা পুলিশ প্রশাসনকে বলেন “ আমি ব্ল্যাড ম্যানি নিয়ে কি করবো! আমার সন্তান কি আর ফিরে আসবে! শিশুটির মা অত্যন্ত পরহেজগার মহিলা। তাঁর বুকফাটা কান্না তিনি পাথর সদৃশ করে রেখেছেন !
এতো বড় উদারতা আরব আমিরাতে কোন বাঙ্গালীর এটাই প্রথম । যা’ ইতিহাস হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেন শারজা আওক্বাফের ইমাম মাওলানা সাইফুল্লাহ মেহেরুজ্জামান।
Discussion about this post