এম.শাহেদ সারওয়ার : মানুষের জন্মের পর শিক্ষার বিষয়টি খুবই গুরুত্ব বহন করে নিজের জীবনকে সঠিক ভাবে পরিচালনার মানসে কিন্তু শুরুতে এর পুরো দায়িত্ব বর্তায় জন্মদাতা মাতা-পিতার এবং ভাই-বোন, শিক্ষক-শিক্ষিকাসহ অনেক পরম আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহীর উপর। এরপর সুশিক্ষার জন্য সাহায্যে নিতে হয় স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়ন করে। এতগুলো গড্ডি পেরিয়ে জ্ঞান আহরণ করে অনেকে ভিন্ন ভিন্ন পেশায় নিয়োজিত রেখে দিনাতিপাত করে। এই ভিন্ন ভিন্ন পেশার মানুষগুলো আবার কেউ কেউ লেখকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায়, পেইজে এবং সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে দিন-রাত লিখে যাচ্ছেন। সেই প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চল থেকে শহর এবং দেশ ও বিদেশের তাদের স্ব স্ব অবস্থান থেকে। কিন্তু কালের পরিক্রমায় সেখান থেকে গুটিকয়েক লেখক নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে বাকিরা কালের বির্বতনে প্রতিভা থাকার স্বত্তেও নিজেকে হারিয়ে পেলে।
কেন বৃহৎ লেখকবৃন্দ আজ নিজের প্রতিভাকে বির্সজন দিয়ে লোকচক্ষুর অন্তরালে হারিয়ে যাচ্ছে কেউ হয়তো ভেবেও দেখেনা। বস্তুতঃ তার অন্যতম কারন সমাজে জ্ঞানীদের সম্মান নেই। কখনো তাঁদের আর্থিক অস্বচ্ছলতা, সামাজিক দায়বদ্ধতা, প্রাতিষ্ঠানিক কোন প্রকার স্বীকৃতি না পাওয়া বা তাঁদের লেখনির বিনিময়ে কোন প্রকার প্রারিশ্রমিক না পাওয়া ইত্যাদি কারনে তাঁরা লেখার প্রতি অনিহা প্রকাশ করে। ফলশ্রুতিতে ধীরে ধীরে সমাজ ও দেশ হারিয়ে পেলে অনেক প্রতিভাবান জ্ঞানী গুণী লেখক ও কবিদের।
“অক্ষরে অমরতা” শ্লোগানের পতাকাবাহী আন্তর্জাতিক সাহিত্য ও সমাজকল্যাণ মূলক এবং অসাম্প্রদায়িক ও অরাজনৈতিক সংগঠন ”কলম একাডেমি লন্ডন”
সেপ্টেম্বরে ৩০ তারিখ ১৩ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করবে। প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে ঐ সব বৃহৎ লেখকবৃন্দ যারা নিজেদের প্রতিভাকে বির্সজন দিয়ে লোকচক্ষুর অন্তরালে হারিয়ে যাচ্ছিল তাঁদেরকে দোজাহানের সংগঠন তথা লেখকদের সঠিক প্লাটফর্ম ‘কলম একাডেমি লন্ডন’ এবং এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক সাহিত্যের বাতিঘর খ্যাত প্রফেসর নজরুল ইসলাম হাবিবী’র অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল এবং ত্যাগের বিনিময়ে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে বিশ্বের অবহেলিত লেখক, কবি, সাহিত্যপ্রেমিকদের আহবান করেন এবং লেখকদের অধিকার আদায়ে যাবতীয় সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে সমন্বিত কর্মসূচী গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশ, ভারত, মিটলইষ্ট, লন্ডন, ইউরোপ, আফ্রিকা সহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের কবি, সাহিত্যিক, গবেষক, সাংবাদিক, সমাজসেবক ও লেখকবৃন্দ কলম একাডেমি লন্ডন এর ব্যানারে অংশগ্রহণে পালন করে আসছে ১৮ ই সেপ্টেম্বর “ বিশ্বলেখক অধিকার” দিবস।
১৮ ই সেপ্টেম্বর বিশ্ব লেখক অধিকার দিবসঃ
১৮ ই সেপ্টেম্বর “বিশ্ব লেখক অধিকার দিবস” এর রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে ও লেখক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে কলমের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক অধ্যাপক নজরুল ইসলাম হাবিবীর পক্ষে যা ইতিমধ্যে বাংলাদেশের মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর দপ্তরসহ বর্হিবিশ্বের বিভিন্ন দেশের দুর্তাবাস ও জাতিসংঘের মধ্যেও লন্ডন হতে ইমেইলে ও সরাসরি দাবিসমূহ পেশ করা হয়েছে। এবং সে দাবি সমুহ বাস্তবায়ন ও প্রতিষ্ঠার দাবিতে কলম একাডেমী লন্ডন এর দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন শাখাসমুহ প্রতিনিয়ত সভা সমাবেশ করে যাচ্ছে। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক লেখক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ১৯ দাবী তুলে ধরেছেন।
সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত বার বছর ধরে সাহিত্যের মাধ্যমে বিশ্বে অসাম্প্রদায়িক এবং সাম্যসমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিশ্বের দেশে দেশে এমনকি গ্রামপর্যায়েও কলমের সংগঠন আছে। এই সংগঠন বিশ্ব জুড়ে এক অনুপম ভ্রাতৃত্ব ও ভালবাসার বন্ধন সৃষ্টি করেছে। জাতি, ধর্ম, দর্শন, শ্রেণি ও বর্ণ নির্বিশেষে সকলের প্রতি সহযোগিতার হাত প্রসারিত করে পৃথিবীতে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এ সংগঠন বৃটেন এবং বাংলাদেশ থেকে রেজিস্ট্রার্ড চ্যারিটিবল সংস্থা (দুই জাহানের সংগঠন) ‘সারাহ-হাবিব লন্ডন’ এর অন্বিত সংগঠন। সাহিত্যের মাধ্যমে সমাজ বিনির্মাণের পাশাপাশি, এই সংগঠন বিভিন্নভাবে সমাজের অসহায় দরিদ্র মানুষের সেবায় এগিয়ে আসে। এই সংগঠন বই-পুস্তক লিখে দেশে-বিদেশে বিনা মুল্যে বিতরণ করে থাকে। শিক্ষা কেন্দ্র স্থাপন, ভারত ও বাংলাদেশের লেখকের লেখা ইংরেজিতে অনুবাদ করে বহির্বিশ্বে প্রচার প্রসারের ব্যবস্থাকরণ, এবং বাংলা ভাষার উপর বহিঃবিশ্বে সভা-সেমিনার করা সহ অনেক কাজ এই সংগঠন করে থাকে। এতে করে আমাদের দেশ ও আমাদের পতাকা আন্তর্জাতিক মহলে সম্মানিত হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে এ দেশে এনে এবং তিনি ইউনাইটেড নেশনে বাংলায় বক্তব্য রেখে আজ ইতিহাস হয়ে আছেন। অনুরূপ ভাবে আমরা বিশ্বাস করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী লক্ষ লক্ষ লেখকের মনের আবেদন ‘লেখক মন্ত্রণালয়’ প্রতিষ্ঠা ও ১৮ সেপ্টেম্বরকে “বিশ্বলেখক অধিকার” দিবস করে ইতিহাস সৃষ্টি করতে পারেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কলমের শাখা আছে। আছেন ভিন্ন ভাষাভাষীর লেখকরাও। তাঁরাও তাঁদের দেশে এই দাবির পক্ষে কাজ করছেন। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা একজন বাংলাদেশী তাই তিনি চান এই দাবির বাস্তবায়ন হোক প্রথম বাংলাদেশ থেকে। বাংলাদেশই প্রথম ইতিহাস সৃষ্টি করুক। পৃথিবীর ইতিহাসে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখিত হোক। এতে বাংলাদেশের নাম ও সম্মান আরো বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে। বিশ্বের ভিন্ন ভাষাভাষীরা বাংলাভাষার প্রতি আগ্রহী হবে। বাংলাদেশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে। আশা করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজ দায়িত্বে বিষয়টি সামনে নিয়ে আসবেন। কারণ তিনি বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশকে ভালোবাসেন।
‘কলম একাডেমি লন্ডন’ ও এর প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক নজরুল হাবিবী মনে করেন আমাদের এই নৈতিক এবং যৌক্তিক দাবি পুরন করা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সম্ভব, কারণ আমাদের কথাগুলি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আপনাদের মনের কথা। তিনি বলেন, লেখকেরা যদি স্বাচ্ছন্দ্যে লিখতে পারেন তখন সাহিত্য সমৃদ্ধ হবে। লেখক সুখি হলে, অভাবে না থাকলে নির্দ্বিধায় নিশ্চিন্তে নানাবিধ কল্যাণকর সাহিত্য রচনা করতে পারবেন। এতে জাতি শিক্ষিত হবে। দেশ মর্যাদাশীল হবে। বিশ্বের ধনী এবং শিক্ষিত রাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশ পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যেতে পারবে। বাংলাদেশ, বাংলাভাষা এবং বাংলাসাহিত্যের গ্রহণযোগ্যতা বিশ্বে বেড়ে যাবে। তাই কলম একাডেমী লন্ডনের দাবি বিশ্বের সকল দেশে লেখক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা (যার সূচনা হবে বাংলাদেশ থেকে)।
বিশ্ব লেখক অধিকার দিবস’ এর রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, লেখক পরিবারের জন্য সরকারি ভাতা, লেখক ও তাঁর প্রজন্মের জন্য ফ্রী শিক্ষা/ উচ্চ শিক্ষার সুযোগ, লেখক ও তাঁর পরিবারের জন্য ফ্রী চিকিৎসা, লেখক ও তাঁর পরিবারের জন্য ফ্রী বাসস্থান, জাতীয় পর্যায়ে পল্লী লেখকদের স্বীকৃতি, সরকারি খরচে পল্লী লেখকদের সাহিত্যকর্মের প্রকাশ ও বিক্রির ব্যবস্থা, চাকরিতে লেখক কোটার ব্যবস্থা, লেখক ও তাঁর পরিবারের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সহ কলম ১৯ যৌক্তিক দাবি পেশ করেছে; যা পৃথিবীর সকল লেখক সাহিত্যিক গ্রহণ করেছেন।
আশা করা যায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী লেখকের গুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়টিকে বাস্তবে রূপ দিয়ে নতুন একটি ইতিহাস সৃষ্টি করবেন। বাংলাদেশ সহ বিশ্বের লক্ষ কোটি লেখকের কাছে তিনি হয়ে থাকবেন পরম সম্মানিত। লেখকেরা আজীবন তাঁকে নিয়ে লিখবেন। তাঁরা আজীবন গাইবেন প্রধানমন্ত্রীর গুণগান। লেখকের কলমে আজকের প্রধানমন্ত্রী পাবেন “অক্ষরে অমরতা” সাথে সাহিত্যের বাতিঘর অধ্যাপক নজরুল ইসলাম হাবিবী হয়ে থাকবেন লেখকদের মাঝে স্মরণীয় ও বরণীয়।
৩০ সেপ্টেম্বর কলম একাডেমি লন্ডন এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীঃ
“অক্ষরে অমরতা” শ্লোগানের পতাকাবাহী আন্তর্জাতিক সাহিত্য এবং সমাজকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান ‘কলম একাডেমি লন্ডন’ বাংলাদেশ এবং ইউনাইটেড কিংডম থেকে রেজিস্টার্ড, হাইকোর্ট থেকে অনুমোদিত নাম ও লোগো, যা কলমি সৈনিকদের প্রাণ প্রিয় সংগঠন। এ সংগঠন ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠা হয়। প্রতি বছর ৩০ সেপ্টেম্বর জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে বাংলাদেশের আনাচে কানাচে, ভারতে ও বর্হিবিশ্বের প্রতিটি শাখায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়। এর মধ্যে থাকে সাহিত্য সভা-সেমিনার।
প্রতিবছর ৩০ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কলম একাডেমি লন্ডন এর প্রতিটি শাখার কলম সৈনিকরা ফেইসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসআ্যপসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় কবিতা, আর্টিক্যাল, পোষ্টার, পেষ্টুন দেওয়ালিকা সহকারে কলমের প্রচার ও প্রসারে লেখকদের অধিকার আদায়ে অগ্রণি ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। যা লেখদের মাঝে ভ্রাতৃত্ববোধ, সামাজিকতা এবং সাহিত্যের মাধ্যমে সমাজ সেবা ও সাম্যসমাজ প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে।
সাংগঠনিকভাবে লেখক, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ তথা সাংস্কৃতিক কর্মীদের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধি এবং তাঁদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ উপাধি ও সংবর্ধনা প্রদান। কলমের লোগো দিয়ে প্রতিটি শাখা থেকে স্টিকার ব্যানার করে প্রচার করা। উৎসাহমূলক লাইক কমেন্টস করা। কবিতা ছড়া গান লেখা। কেন্দ্রীয়ভাবে শ্রেষ্ঠ সংগঠক ও শ্রেষ্ঠ লাইক কমেন্টকারী নির্বাচন করে আর্থিক পুরস্কার, ক্রেস্ট ও সম্মাননা সনদ প্রদান করা এবং লেখা আহ্বান এবং তার জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থা করা। কোন একজন লেখকের বই কলমের টাকায় প্রকাশ এবং প্রচারে ব্যবস্থা, পল্লী পাঠাগার, পল্লী স্কুল, দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করাসহ ইত্যাদি কলম একাডেমি লন্ডনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আয়োজন করা হয়।
বিশেষ করে “কলম একাডেমি লন্ডন” এর কর্ণধার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি পরিচালক বিশ্ব বরেণ্য ব্যক্তিত্ব, বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী, বর্তমান সাহিত্য জগতের পুরোধা, অক্ষরে অমরদাতা পতাকার বাহক প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্বময় কলম সৈনিকদের উদ্দেশ্যে প্রতিবছর পৃথক বাণী ও গাইড লাইন দেন। তিনি কলম একাডেমি লন্ডন দল-দর্শনের বাহিরে এসে দেশে এবং বহিঃবিশ্বেও বাংলার সাহিত্যের কল্যাণে অবদান রাখছে বলে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অভিমত প্রকাশ করেন। তিনি আরো অভিমত ব্যক্ত করেন যে কলমের মাধ্যমে বিশ্বে মহান বাংলাভাষা আরো সম্প্রসারিত ও সম্মানিত হবে। জাতি ধর্ম , বর্ণ ও দলমত নির্বিশেষে মানুষের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হবে। প্রতিষ্ঠিত হবে লেখকদের অধিকার ও অসাম্প্রদায়িক সাম্য সমাজ ব্যবস্থা। তিনি নিজেকে মাঝেমধ্যে ‘শব্দস্বজন’ বলে পরিচয় দেন।
জয় হউক কলমের। জয় হউক লেখকের এবং জয় হউক মানবতার।
লেখক,
সাধারণ সম্পাদক
কলম একাডেমি লন্ডন- ইউ.এ.ই. চ্যাপ্টার।
Discussion about this post