৯৯% গাযাবাসী তাদের জীবনে কোনোদিন আল-আকসা মসজিদে যেতে পারেনি। শেখ আহমেদ ইয়াসিন, ইসমাইল হানিয়ারা শহিদ হয়ে গেছেন, খালেদ মিশালরা এক জীবন নির্বাসনে কাটিয়ে দিয়েছেন, কিন্তু আকসায় যেতে পারেননি।
ইভেন মাহমুদ আব্বাসকেও রেয়ার অকেশন ছাড়া আকসায় যেতে দেওয়া হয় না। পশ্চিম তীরের সাধারণ অধিবাসীদের উপরেও বছরের অধিকাংশ সময় নিষেধাজ্ঞা থাকে – ২৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সীরা আকসায় প্রবেশ করতে পারবে না।
কিন্তু বাংলাদেশী (এবং অন্যান্য মুসলিম কান্ট্রি) থেকে কেউ আকসায় যেতে চাইলে খুব সহজেই যেতে পারে। তেল আবিব দিয়েই যেতে পারে। দেশে ফিরে যেন ঝামেলায় পড়তে না হয়, সেজন্য তারা ইভেন পাসপোর্টেও ভিসা দেয় না। আলাদা একটা কাগজে দেয়।
আমার আগের পোস্টেই একজনে কমেন্ট করেছে, এই “হুজুর”দের একজন তার প্রতিবেশী। সে তাকে বলেছে, ইসরায়েল হয়ে আকসায় যাওয়া খুবই সহজ। কেউ চাইলেই সে ব্যবস্থা করে দিতে পারবে। তার বক্তব্য অনুযায়ী, এসব ব্যাপারে “ইসরায়েলি সৈন্যরা খুবই হেল্পফুল”।
কারণটা কি আপনি বুঝতে পারছেন? না বুঝলে বুঝিয়ে বলি।
ইসরায়েলের সাথে অধিকাংশ মুসলিম কান্ট্রির কূটনৈতিক সম্পর্ক নাই। কিন্তু সেসব মুসলিম রাষ্ট্রের জনগণ যদি সহজেই ইসরায়েলে “ট্যুর” দিতে পারে, দখলকৃত হিস্টরিক আব্রাহামিক সাইটগুলোতে “ভিজিট” করতে পারে, আকসা মসজিদে একবেলা “প্রে” করতে পারে, তাহলে ইসরায়েলের অনেকগুলো লাভ:
১। ট্যুরিজম থেকে অর্থ উপার্জন।
২। পিআর ক্যাম্পেইন। এই হুজুরদের মতোই দেশে ফিরে গিয়ে তাদের অনেকেই বলবে – “আল-আকসা সম্পূর্ণ নিরাপদ। কোথাও কোনো গন্ডগোল নাই। ইসরায়েলি সৈন্যরা খুবই হেল্পফুল।”
৩। নরমালাইজেশন। এই ট্যুরিস্টরা যখন দেশে ফিরে গিয়ে ইসরায়েলি বিভিন্ন সাইটের ছবি, ইসরায়েলি সৈন্যদের পাশে দাঁড়ানো ছবি পোস্ট করবে, তখন সেগুলো দেখতে দেখতে মানুষের মধ্যে গণহত্যাকারী অবৈধ রাষ্ট্রটাকেও আর দশটা ট্যুরিস্ট স্পটের মতো স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করার মানসিকতা তৈরি হবে।
এখন যেরকম অনেকে লজিক দিচ্ছে, ট্যুরে গেলে সমস্যা কোথায়, দুই দিন পর পাল্টা ইসরায়েলি নাগরিকরাও যখন ট্যুরিস্ট হিসেবে দেশে আসবে, তখনও সেটাকেও ডিফেন্ড করার মতো একদল লোক তৈরি হয়ে যাবে।
আজ থেকে পাঁচ-দশ-পনের বছর পর কোনো সেক্যুলার শাসক যখন ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক নরমালাইজ করবে, তখন মনে রাখবেন, এর প্রথম বীজ বপন করেছিল এই ধরনের “হুজুর”রা।
Discussion about this post