মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে গত সোমবার বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে অন্তত ৩৩ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক মানুষ, যাদের অনেকের অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক।
ওই ঘটনায় মাইলস্টোনের শিক্ষার্থী সূর্য তার পাঁচ বন্ধুকে প্রাণে বাঁচিয়েছেন। এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেছেন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক শারমিন সাথী।
ফেসবুক পোস্টে শারমিন সাথী লিখেছেন, ‘আমাদের ছেলে সূর্যের একটি ভিডিও দেখলাম। সেখানে সে স্কুল ভবনের কার্নিশে দাঁড়িয়ে আছে। অনেকেই হয়তো ভিডিওটি দেখেছেন। আমি আপনাদের বলব, সূর্য কীভাবে বেঁচে গেল।’‘রোববার সূর্য ক্লাসে যায়নি, তাই হোমওয়ার্ক ছাড়াই ২১ জুলাই সোমবার ক্লাসে গিয়েছিল। তাই তার ক্লাস টিচার ডিটেনশন ক্লাসে যেতে বলেছিল। ডিটেনশন ক্লাস হলো যারা হোমওয়ার্ক করেনি বা ক্লাসে মনোযোগ দেয়নি তাদের জন্য স্কুলের অতিরিক্ত সময়ের ক্লাস।’
শিক্ষক সাথী বলেন, ‘সূর্যের ক্লাস টিচার বাপ্পি স্যার সূর্যসহ পাঁচজনকে কর্নারের ক্লাসরুমে যাওয়ার নির্দেশ দেন। তারা ভবনের শেষের আগের রুমে যায়। ঠিক সেই সময়ে বিকট শব্দ হয় এবং তারা দেখেন তাদের ক্লাসরুমের সামনে আগুন লেগেছে। একজন বের হওয়ার সময় পুড়ে মারা যান। তারা ভয় পেয়ে দ্রুত কর্নারের ক্লাসরুমে ঢুকে পড়ে
মাইলস্টোনের সেই ছোট্ট রাইসা মনি চিরনিদ্রায়
মাইলস্টোনের সেই ছোট্ট রাইসা মনি চিরনিদ্রায়
বিস্তারিত পড়ুন
তিনি বলেন, ‘ডিটেনশন রুম পর্যন্ত আগুন পৌঁছায়নি, তবে রুমের তাপমাত্রা ছিল প্রায় ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (সূর্যের বর্ণনা অনুযায়ী)। সূর্য মনে করছিল শরীর পুড়ে যাচ্ছে। তারা জানালার কাছে গিয়ে শ্বাস নিতে চেষ্টা করছিল, কারণ ঘরে কালো ধোঁয়া দিয়ে শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল।’
‘পরিস্থিতি একটু স্থিতিশীল হলে সূর্য ক্লাসরুম থেকে বের হয়ে বারান্দায় দাঁড়ায়। তখন ছাত্রদের ভিড় থেকে কেউ ইশারা করে ডান দিকে যেতে বলল। সূর্য দেখল সেখানে গ্রিল কেটে একটি পথ তৈরি করা হয়েছে। সে দ্রুত বন্ধুদের ডেকে নিয়ে বের করে আনে। এরপর কার্নিশের ওপর দাঁড়িয়ে প্রথমে বন্ধুদের নামার সুযোগ করে দেয়।’
শারমিন সাথী বলেন, ‘আমাদের ছেলেকে আমরা মানবিক মানুষ হিসেবে বড় করেছি, সেটা সে যথাযথভাবে প্রমাণ করেছে। কখনো তাকে বলিনি, এ প্লাস বা প্রথম হতে হবে। আমরা চাইতাম সে মানবিক হোক। আজ সে সেটাই দেখিয়েছে।’।’
Discussion about this post