বর্তমান কোভিড ১৯ মহামারীর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশী প্রবাসী শ্রমিকদের স্বার্থ সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনার জন্য ঢাকা অভিবাসী শ্রমিকদের হোস্ট দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ প্রবাসী শ্রমিকদের হোস্ট দেশগুলোর কূটনীতিকদের ব্রিফিংকালে এ আহবান জানান।
সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), কাতার, ওমান, ইরাক ও মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রদূত এবং প্রতিনিধি ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন। মঙ্গলবার কুয়েতের আমির শেখ সাবাহ আল-আহমেদ আল সাবাহ’র ইন্তেকালের কারণে কুয়েতের রাষ্ট্রদূত ব্রিফিংয়ে যোগ দিতে পারেননি।
ড. মোমেন বলেন, তারা শ্রমিকদের বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনার জন্য এ সব দেশের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
কোভিড ১৯ মহামারীর মধ্যে প্রবাসী শ্রমিকদের সমস্যার সমাধানের উপায় তুলে ধরতে জনশক্তি ইস্যুতে সরকার বুধবার উপসাগরীয় দেশগুলো এবং মালয়েশিয়ার কূটনীতিকদের সরকার এই ব্রিফিং করেছে।
ব্রিফিংয়ে দুই মন্ত্রী প্রবাসী শ্রমিকরা যে সব সমস্যার মোকাবেলা করছেন সেগুলো তুলে ধরেন। মহামারীর কারণে তারা এখানে আটকে পড়েছেন। তাদের চাকুরি দাতা দেশগুলোতে ফিরিয়ে নেয়ার পাশাপাশি সমস্যা সমাধানের উপায় নিয়ে আলোচনা হয়।
কূটনীতিকদের সাথে বৈঠকের পর ড. মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, `আমাদের বৈঠক ভালো হয়েছে, অমরা বিষয়টি (শ্রমিকদের সমস্যা)সহানুভূতির সঙ্গে দেখার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি।’
“আমরা সব সময়েই আশাবাদী” উল্লেখ করে ইমরান বলেন, দেশে এবং বিদেশে বাংলাদেশী প্রবাসী শ্রমিকদের কল্যাণের ইস্যুতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো থেকে ইতিবাচক সাড়া আশা করছি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, প্রায় ৬ হাজার শ্রমিক ইতোমধ্যেই বিদেশে তাদের কর্মস্থলে ফিরেছেন এবং অন্যরাও ফিরতে সক্ষম হবেন।
তিনি বলেন, `আমাদের কিছু ইস্যু আছে সৌদি আরবে দ্রুত ফেরা নিয়ে, সৌদি আরব ছাড়া অন্য দেশগুলোতে আমাদের শ্রমিকদের ফেরত পাঠানো নিয়ে কোন সমস্যা নেই।’
ফ্লাইট সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে মোমেন বলেন, উভয় দেশের বেসামরিক বিমান পরিবহন কতৃপক্ষ আগামীকাল থেকে সপ্তাহে ২০টি ফ্লাইট পরিচালনায় ব্যাপারে অনুমোদন দিয়েছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং সৌদি এয়ারলাইন্স এখানে আটকে থাকা বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশী শ্রমিককে ফিরিয়ে নিতে আগামীকাল থেকে সপ্তাহে ১০টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে।
মোমেন বলেন, এখানে সৌদি দূতাবাস বাংলাদেশী শ্রমিকদের জন্য ২৫ হাজার ভিসা নবায়নের ব্যাপারে সম্মত হয়েছে। মহামারীর কারণে ফিরতে না পারায় তাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়।
সৌদি মিশনে এখানে মাত্র ৭ জন কর্মচারী রয়েছেন এ কথা উল্লেখ করে ড. মোমেন সৌদিগামী বাংলাদেশী সকল শ্রমিককে ধৈর্য প্রদর্শনের আহবান জানিয়ে বলেন, প্রত্যেকে তাদের ভিসা নবায়নে সক্ষম হবেন। কোভিড ১৯ মহামারীর কারণে ১০ থেকে ১৫ লাখ বাংলাদেশী শ্রমিক দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হবে এমন আশঙ্কার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, মহামারীর মধ্যে মাত্র ১ লাখ ৩৭ হাজার বাংলাদেশী দেশে ফিরেছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশী প্রবাসী শ্রমিকরা স্মার্ট এবং কঠোর পরিশ্রমী এ কারণে তারা জানে কঠিন সময় কিভাবে টিকে থাকতে হয়।
সূত্র : বাসস
Discussion about this post