যখন দেশ থেকে কোন আত্মীয় স্বজন তাদের কাছে টাকা পয়সা বা অন্য কিছুর জন্য আবদার করে তখন যদি তারা তা না দিতে পারে, তাহলে ঐ প্রবাসীকে শুনতে হয় অনেক বকা ঝকা। কিন্তু দেশের মানুষ জানেনা প্রবাসে উনি কত কষ্টে আছেন ।
ইদানিং ফ্রান্সে বেশ কয়েকজন প্রবাসী বাংলাদেশির অকাল মৃত্যু ও কর্মক্ষেত্রে তাদের দুর্ঘটনা আমার অনেক রাতের চোখের ঘুম কেরে নিয়েছে । নির্ঘুম চোখে কান্ত মনে ভাবতে থাকি – পরিবারের সুখের জন্য একজন প্রবাসী নিজের মা ও মাতৃভূমি ছেড়ে অনেক কষ্ট করে টাকা পয়সা উপার্জন করে দেশে থাকা স্ত্রী, ছেলে- মেয়ে , মা-বাবা,ভাই বোনদের দিয়ে থাকেন ।
কিন্তু যদি কখনো টাকা পয়সা দিতে তাদের একটু দেরি হয় , তাহলে শুনতে হয় অনেক কথা । তারা কি কখনো ভাবেন তাদের ছেলে, ভাই , চাচা অথবা বাবা কত কষ্টে থেকে টাকা উপার্জন করে নিজের সুখ বিলীন করে তাদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য প্রতি মাসে দেশে টাকা পাঠান ?
তারপরও অনেক পরিবার এসব প্রবাসীদেরকে মানসিক ভাবে অনেক সময় অনেক কিছুর জন্য চাপ দিতে থাকেন । একদিকে কর্মস্থলে কাজের ব্যস্ততা , অন্যদিকে কখন বৈধ কাগজপত্র হবে সেই চিন্তা করতে করতে একসময় হয়ত হার্ট অ্যাটাক অথবা স্ট্রোক করে মারাযান অনেক প্রবাসীরা ।
আর এইসব প্রবাসীরা যখন তাদের কর্মস্থলে মারাযান তখন যদি তাদের লাশ দেশে নিতে এই প্রবাসীর কষ্টে অর্জিত টাকায় মুখে হাসি ফোটানো পরিবারের মানুষগুলো তার লাশ দেশে ফিরেয়ে নিতে চায়না এর চেয়ে কষ্ট ও বেদনাময় আর কিছু হয়না ।
গত ১১ ডিসেম্বর ফ্রান্সে রেস্টুরেন্টে কাজে থাকা অবস্থায় হার্ট অ্যাটাক করে এক প্রবাসী বাংলাদেশি মারাযান । কিন্ত এই প্রবাসী বাংলাদেশি ভাই মারা যাওয়ার পর তার লাশ – স্ত্রী ,লন্ডন প্রবাসী ভাইও দেশে নিতে নারাজ।পরিবারের কাছে এই প্রবাসীর লাশটি ছিল মূল্যহীন । পরে ফ্রান্স প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটির মানুষের সহযোগিতায় লাশটি দেশে মৃতের মায়ের কাছে পাঠানো হয় ,
প্রবাসীদের প্রতিটি পরিবারে প্রতি অনুরোধ রইল – আপনারা দেশের বাহিরে থাকা মানুষগুলোকে মানসিক চাপ দেওয়া থেকে বিরত থাকুন ।
বিদেশে কোন প্রবাসী মারা গেলে তাদের লাশ দেশে নিয়ে স্বযত্নে দাফন করুন ।
নিরাপদ ও শান্তিময় হোক
সকলের প্রবাস জীবন ।
🖌 মুহাম্মদ রুহুল আমিন ,
প্যারিস , ফ্রান্স ।
Discussion about this post