প্রবাসে প্রতিটি ঈদেই ২৫০ কিমি পাড়ি দিয়ে রাস’ আল খাইমায় দাদার কাছে চলে যেতাম। দু তিন দিন আগে থেকেই দাদা আমার জন্য আমার পছন্দের সব খাবার মজুদ করে রাখতেন। যেমন, দেশী ছোট মাছ, বড় বড় চিংড়ী, ছোট মাছের শুটকি, দেশী মুরগী, গরু ছাগলের পা ও ভুঁড়ি, বিভিন্ন রকমের শাক সবজি। দাদা খুব যত্ন করে নিজ হাতে রেঁধে আমাকে খাওয়াতেন। খেয়ে দেয়ে আমার পেট ভরে গেলও যেন দাদার মন ভরতোনা ! চাইতো আমাকে পূর্ণ তৃপ্ত করতে।
মনে পড়ে, প্রবাসে আসার দিন আব্বা জিজ্ঞেস করেছিলেন, আমি রান্না করে খেতে পারব কি না? উত্তরে বলেছিলাম কেন পারবনা? সবাইত পারে। ১০ বছর পেরিয়ে গেছে আমার রান্না করার সুযোগ হয়নি! রেস্টুরেন্টেই খেতে হয়। দাদার রুমের সবাই ছিল খুবই অমায়িক আর অতিথি পরায়ণ, বেলাল ভাই, ইয়াসিন ভাই, সাইফুল ভাই সহ আরো অনেকে যাদের উদারতা ভুলা যাবেনা। মাঝে মাঝে তাদের সাথে দেখা করার খুব ইচ্ছে হয় কিন্তু এটা খুবই কঠিন।
ঈদের দিনেও কাজ করতে হয় আন- অফিসিয়ালি । প্রবাসে বিগত বছরগুলোর ঈদের ছুটিগুলো ছিল আমার জীবনের সব চেয়ে অনন্দের, দাদা আর আমি মিলে আধো আলো রাতে বাবলা গাছের নিচে বসে পরিবারের সুখ -দুখ ভাগাভাগি করে নিতাম, বিপর্যয় এড়ানোর জন্য সর্বাত্তক চেষ্টা ও পরিকল্পনা করতাম। আহা! ঐ সময় গুলো কতো যে স্পর্শকাতর ছিল বলে বুঝানো যাবেনা।
দাদা আর প্রবাসে নেই ২০১৭ সালে দেশে চলে গেছেন। ২০১৮ থেকে আজ অবধি প্রতিটি ঈদ একা একাই করে যাচ্ছি। যেভাবেই ঈদ আসুক যাক, যেভাবেই দিন আসুক যাক, সর্বাবস্থায় আল্লাহ তায়ালার হাজার শুকরিয়া। আলহামদুলিল্লাহ প্রবাসে আমি ব্যার্থ হইনি। কাল আবার ঈদ,সবাইকে ঈদের মুবারাক।
মনের পশু কুরবানীর মাধ্যমে পৃথিবীর সকল মুমিনের ঈদ উদযাপিত হোক।
আশরাফ বিন এ হক।
আবুধাবি।
Discussion about this post