ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় প্রলোভন দেখিয়ে তৃতীয় বিয়ের কথা নিয়ে তর্কের জেরে গ্রামবাসীর দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় নারীসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে ভাঙ্গা উপজেলার হামিরদী ইউনিয়নের মনসুরাবাদ গ্রামে সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটেছে।
গুরুতর আহতদের মধ্যে রিয়াজ মাতুব্বর (৫৫), ইখলাছ মাতুব্বর (৩৭), চাম্পা বেগম (৩০), ও কাউসার মাতুব্বর (৫২) ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অন্য আহত সাইদুর মোল্লা (৩৮), সাইদুর দফাদার, পান্নু ফকির, মাহাবুর মোল্লা ও সাজ্জাদ শেখকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মনসুরাবাদ গ্রামের আকরাম মেম্বার গ্রুপের জাহিদ হুজুর গ্রামে একটি মহিলা মাদ্রাসা করেছেন। সেই মাদ্রাসার এক ছাত্রীকে তিনি বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে বিয়ে করেন। এ বিয়েটি নিয়ে জাহিদ হুজুরের তৃতীয় বিয়ে। অপর দিকে সেই ছাত্রী ওই গ্রামের প্রতিপক্ষ বাবর আলী মেম্বার গ্রুপের ইলিয়াস মাতুব্বরের মেয়ে।
গতকাল মঙ্গলবার ছিল ওই মহিলা মাদ্রাসার ওয়াজ মাহফিল। সেই মাহফিলে ওই শিক্ষার্থীর বাবা (জাহিদ হুজুরের শ্বশুর) ইলিয়াস মাতুব্বর তার জামাই জাহিদ হুজুরের বিরুদ্ধে মনসুরাবাদ বাজারে শিক্ষার্থীকে কীভাবে বিয়ে করে এ বিষয় নিয়ে গালাগাল করেন। এ নিয়ে লোকজনদের মাঝে জামাই-শ্বশুরের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
সেই জেরে আজ বুধবার আকরাম মেম্বার ও বাবর আলী মেম্বার গ্রুপের সদস্যরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। উভয় দলের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে। ঘণ্টাব্যাপী চলে সংঘর্ষ। খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় উভয় দলের কমপক্ষে দশ জন আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় আকরাম মেম্বার কালবেলাকে বলেন, জাহিদ হুজুরের ওয়াজ মাহফিলের সময় ভেজাল করতে চেয়েছিল এজন্যই দুই পক্ষের মারামারি হয়েছে।
এদিকে অপর পক্ষের দলনেতা বাবর আলী মেম্বার বলেন, জাহিদ হুজুর এভাবেই প্রলোভন দেখিয়ে তিনটি বিয়ে করেছেন। সেই বিষয়টি নিয়ে মেয়ের বাবা ইলিয়াস মাতুব্বর জাহিদের অভিভাবকের কাছে নালিশ দিলে তারা তাকে আরও ছয়টি বিয়ে করাবেন বলে উলটো গালমন্দ করেন। এ নিয়ে তারা মেয়ের বাপ-চাচাকে মারধর করে।
এ বিষয়ে ভাংগা থানার ওসি মোকছেদুর রহমান কালবেলাকে বলেন, ছাত্রী বিয়ে করাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দুই দফায় মারামারি হয়। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দুই পক্ষের দুজনকে থানায় ডেকে নেওয়া হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
Discussion about this post