মানুষের প্রতিটি আমল তার নিয়তের উপর নির্ভরশীল। পরিশুদ্ধ নিয়ত ব্যতিরেকে কোন আমলই গ্রহণযোগ্য হয় না। বিশুদ্ধ নিয়তের জন্য প্রয়োজন অভ্যন্তরীণ পরিশুদ্ধি। তাকওয়া-তাওয়াক্কুল, ইবাদাত-বান্দেগিতে একাগ্রতা সৃষ্টির জন্য প্রয়োজন সিনা-ব-সিনা তাওয়াজ্জুহ বিশিষ্ট তরিক্বত। কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা খলিলুল্লাহ, আওলাদে মোস্তফা, খলিফায়ে রাসূল (দ.) হযরত শায়খ ছৈয়্যদ গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আন্হুর প্রতিষ্ঠিত তরিক্বতের মাধ্যমে মানুষ অভ্যন্তরীণ পরিশুদ্ধি অর্জন করে। এ তরিক্বতে রয়েছে রাসূলে পাক (দ.) এর বাতেনি নূরের তাওয়াজ্জুহ, ফয়েজে কুরআন তথা কুরআনের নূর লাভের সুযোগ, মোরাকাবার অনুশীলন এবং দৈনিক ১১১১ বার দরূদে মোস্তফা পড়ার বিধান। রাসূলে পাক (দ.) এর বাতেনি নূরের তাওয়াজ্জুহ প্রদানের মাধ্যমে ক্বলবের অন্ধকার দূর করে আল্লাহ তা’আলার জিকির জারি করান। মানুষের মাঝে নবীপ্রেমের শিক্ষা দিয়ে রাসূলে পাক (দ.) এর সুমহান আদর্শ ও আখলাকে হাসনার আলোকে জীবন গঠনে সকলকে অনুপ্রাণিত করেছেন। বিশেষ করে যুবসমাজের চারিত্রিক পরিশুদ্ধির মাধ্যমে একটি সুন্দর সৌহার্দপূর্ণ ও মানবিক সমাজ বিনির্মানে অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালন করেছেন। নবীপ্রেমের ইতিহাসে তিনি এমন অতুলনীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন অলৌকিকভাবে সরাসরি ‘বাইয়াতে রাসূল’ এর মাধ্যমে পেলেন খলিফায়ে রাসূলের অমূল্য মর্তবা। তাঁর মহান জীবনাদর্শ আল্লাহ সন্ধানী মানুষদের চিরকাল অনুসরণ ও অনুকরণের শাশ্বত দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। নফসের কুপ্রবৃত্তি অবদমিত করে রূহানিয়ত বিকাশের মাধ্যমে মনজিলে মকছুদে পৌঁছার অনন্য সোপান খলিফায়ে রাসূল (দ.) হযরত শায়খ ছৈয়্যদ গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আন্হুর এই মহিমান্বিত তরিক্বত। যে তরিক্বতের ছায়াতলে এসে পথহারা মানুষ পাচ্ছে সিরাতুল মোস্তাকিমের দিশা, লিল্লাহিয়ত ও খুলুছিয়তের শিক্ষা, নবীর নূরের আরাধ্য ফুয়ুজাত ও বারাকাত।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) বাদে জুমা রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ পূর্ব গেইট সম্মুখস্থ ময়দানে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক এশায়াত সম্মেলনে উপস্থিত লাখো মুসলমানের উদ্দেশ্যে প্রধান মেহমানের বক্তব্যে কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের মাননীয় মোর্শেদ আওলাদে রাসূল (দ.) হযরতুলহাজ্ব আল্লামা অধ্যক্ষ শায়খ ছৈয়্যদ মোর্শেদে আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট ও সিনেট সদস্য এবং মুনিরীয়া যুব তবলিগ কমিটি বাংলাদেশের সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এশায়াত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ জমিয়তুল মোদার্রেছীনের সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক আলহাজ্ব এ. এম. এম. বাহাউদ্দীন, মহাসচিব হযরতুলহাজ্ব আল্লামা শাব্বির আহমদ মোমতাজী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গণিত বিভাগের প্রফেসর ড. জালাল আহমেদ।
বক্তব্য রাখেন মুফতি মাওলানা মুহাম্মদ কাজী আনোয়ারুল আলম ছিদ্দিকী, মাওলানা মুহাম্মদ আবদুস সবুর, মাওলানা মুহাম্মদ ফোরকান, মাওলানা মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন, মাওলানা মুহাম্মদ এরশাদুল হক, মাওলানা মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন নূরী, মাওলানা মুহাম্মদ রকিব উদ্দিন, মাওলানা মুহাম্মদ গোলাম রাব্বানি ফয়সাল।
এছাড়াও বাদে জুমা হতে শুরু হওয়া সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন দেশের স্বনামধন্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে কর্মরত দেশবরেণ্য বিশিষ্ট ওলামায়ে কেরামগণ।
উল্লেখ্য শুক্রবার সকাল থেকে দেশের জেলা উপজেলা ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের উপস্থিতিতে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ পূর্ব গেইট সম্মুখস্থ ময়দানসহ আশপাশের এলাকা ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। কোথাও ছিলোনা তিল ধারনের টাই। এছাড়াও দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ বুদ্ধিজীবী সামাজিক রাজনৈতিক ধর্মীয় সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
মিলাদ-কিয়াম শেষে মাননীয় প্রধান মেহমান দেশ, জাতি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি-সমৃদ্ধি এবং কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা হযরত শায়খ ছৈয়্যদ গাউছুল আজম রাদিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহুর ফুয়ুজাত কামনা করে বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করেন।
Discussion about this post