শরীয়তপুরের জাজিরায় মসজিদের মাইকে আজান দেওয়ায় ঘুমের ব্যাঘাত হচ্ছে, এমন অভিযোগ তুলে ইমামকে হুমকি দেওয়ার প্রতিবাদ করায় খবির সরদার নামের এক বিএনপি নেতাকে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত আলমাস সরদারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বড়কান্দি ইউনিয়নের ওমরদি মাদবর কান্দি এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহত খবির সরদার ওই এলাকার মৃত ইউনূস সরদারের ছেলে ও ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ওমরদি মাদবর কান্দি এলাকার মসজিদে ভোররাতে মাইকে আজান দেওয়া ও বয়ান করায় ঘুমের ব্যাঘাত হচ্ছে, এ অভিযোগ তুলে সম্প্রতি ইমামকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে আলমাস সরদারের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানতে পেরে মসজিদ কমিটির লোকজন এর প্রতিবাদ জানান এবং পরে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আলমাস সরদার। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাড়ির সামনে মসজিদ কমিটির সদস্য ও ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক খবির সরদারকে ছুরিকাঘাত করার অভিযোগ ওঠে আলমাস সরদারের বিরুদ্ধে। স্থানীয়রা চিৎকার শুনে এগিয়ে এসে খবির সরদারকে দ্রুত উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এ ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।মসজিদ কমিটির সভাপতি দানেশ সরদার বলেছেন, মসজিদের মাইকে আজান ও বয়ান দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে আলমাস সরদার ইমামকে হুমকি দিয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে আমাদের কমিটির পক্ষ থেকে থানায় জিডি করা হয়। এর পর থেকেই আলমাস আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল। সুযোগ বুঝে খবির সরদারকে ছুরিকাঘাতে করে হত্যা করেছে। আমরা এর বিচার চাই।জাজিরা উপজেলা বিএনপির সভাপতি বজলুর রশিদ শিকদার বলেছেন, মসজিদের মাইকে আজান দিলে আলমাস সরদারের ঘুমে ব্যাঘাত হয়, তাই সে মসজিদে এসে হুজুরকে হুমকি দেয়। পরে মসজিদের সবাই প্রতিবাদ জানায়। তাই, আলমাস গংরা ক্ষিপ্ত হয়ে খবির সরদারকে হত্যা করেছে। খবির সরদার আমাদের বিএনপি একনিষ্ঠ কর্মী ও বড়কান্দি ইউনিয়নের যুগ্ম আহ্বায়ক। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই ও দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।
জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা কবির আলম বলেছেন, ওই ব্যক্তিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। ওনার বুকের ডান পাশে চাকু দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। এতে তার ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছিল। এতেই তিনি মারা গেছেন।
জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইনুল ইসলাম বলেছেন, খবির সরদার নামের এক ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছি।
Discussion about this post