নাটোরের নলডাঙ্গায় ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে এক যুবদল কর্মীকে বেধড়ক পিটিয়ে পরে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ নেতা ও তার ভাইদের বিরুদ্ধে। জমিতে সেচ দিতে গিয়ে বোরো ধানের চারা পানিতে ডুবে যাওয়ার তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে উপজেলার পূর্ব সোনাপাতিল গ্রামে এ ঘটনার প্রতিবাদে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা ও তার ভাইদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে স্থানীয় বিএনপি ও যুবদল।
এর আগে বুধবার (২৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার পূর্ব সোনাপাতিল গ্রামের জামতলী খালের ব্রিজের কাছে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ও আহত ওই পৌর যুবদল কর্মীর নাম মামুন সরদার (৩৮)। তিনি উপজেলার পূর্ব সোনাপাতিল গ্রামের মৃত আফসার আলীর ছেলে।
অভিযুক্ত আ.লীগ নেতার নাম আব্দুল মজিদ ভুট্টু। তিনি উপজেলার পূর্ব সোনাপাতিল গ্রামের মৃত করিম সাকিদারের ছেলে। এ ছাড়াও তিনি নলডাঙ্গা পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
যুবদল কর্মী মামুনের ভাই আততাব বাবু, ফিরোজ মাহমুদ রবিন, নলডাঙ্গা থানা পুলিশ ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিকেলে নলডাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের নেতা আব্দুল মজিদ ভুট্টুর জমিতে সেচ দেন। এ সেচের পানি যুবদল কর্মী মামুন সরদারের চাচাতো ভাই বাবুর রোপণ করা বোরো বীজতলায় যায়। এ পানি যাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মামুন আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মজিদ ভুট্টুর ভাই আজাহারকে লাঠিপেটা করেন।
এ খবর পেয়ে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মজিদ ভুট্টু ও তার ভাইয়েরা গিয়ে দেশীয় অস্ত্র, চাপাতি ও হাঁসুয়া দিয়ে মামুন সরদারকে বেধড়ক পেটায় ও কুপিয়ে রক্তাক্ত-জখম করেন। পরে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। খবর পেয়ে নলডাঙ্গা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
এসময় গুরুতর আহত অবস্থায় মামুনকে উদ্ধার করে তার স্থানীয়রা প্রথমে নাটোর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাতেই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যুবদল কর্মী মামুন সরদারকে কুপিয়ে জখম করেছে আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা আব্দুল মজিদ ভুট্টু ও তার ভাইয়েরা। পরে তারা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে সেখান থেকে চলে যায়। এ ঘটনায় আক্রমণকারী আব্দুল মজিদ ভুট্টু ও তার ভাইদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নলডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি এমএ হাফিজ, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বুলবুল, পৌর বিএনপির নেতা আবু জাফর হোসেন, রফিকুল ইসলাম, উপজেলা যুবদল সভাপতি রুপচাঁন, যুবদলের আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
নলডাঙ্গা থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, জামতলী গ্রামে সংঘর্ষের খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এখন সেখানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Discussion about this post