মুন্সীগঞ্জে কাজি সেজে ছাত্রীর সঙ্গে বিয়ের নাটক সাজিয়ে দীর্ঘ দুই বছর ধরে ধর্ষণের অভিযোগ এসেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে প্রতিষ্ঠানপ্রধান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেন অভিনব প্রতারণার শিকার ওই শিক্ষার্থী। এ ঘটনার পর গা ঢাকা দিয়েছেন অভিযুক্ত শিক্ষক।
অভিযুক্ত মুহাম্মদ শাহনেওয়াজ সরকার (৪৩) মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার ব্রাহ্মণভিটা ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক।
অভিযোগকারী ছাড়াও তার অন্য একটি স্ত্রী এবং সে সংসারে একটি সন্তান রয়েছে।অভিযোগকারী শিক্ষার্থী বলেন, ‘২০২২ সালে দশম শ্রেণিতে থাকাকালীন শিক্ষক শাহনেওয়াজ সরকার স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়তাম। তখনই তিনি আমাকে নানাভাবে ফুঁসলিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলেন। আমাদের মধ্যে একটি সম্পর্ক তৈরি হয়ে যায়।
সম্পর্কের ৬ মাস পর ২০২২ সালের ডিসেম্বরে প্রাইভেট পড়ানোর স্থানে তথাকথিত বিয়ের নাটক সাজিয়ে কোনো রকম সাক্ষী ছাড়াই নিজে কাজি সেজে আমাকে বিয়ে করেন। এর পর থেকে তার সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কও হয়। আমি এক পর্যায়ে তাকে রেজিস্ট্রির কথা বললে তিনি বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে এড়িয়ে যেতেন। এভাবে ১৭-১৮ মাস চলে যায়।
গত মাসেও আমি বিয়ে করার জন্য তাকে চাপ দিই। কিন্তু তিনি আমার সঙ্গে আর যোগাযোগই রাখতে চাচ্ছেন না, আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। আমি চাই, তিনি আমাকে বিয়ে করে স্ত্রীর মর্যাদা দিক।’ওই শিক্ষার্থী আরো বলেন, ‘বিষয়টি আমি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে জানিয়েছিলাম। তিনি বারবার আমাকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। আমি ন্যায়বিচার চাই।
এসব অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত শাহনেওয়াজের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে তার বাড়ির ঠিকানায় গিয়ে বসতঘর তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণভিটা ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুমন মোহাম্মদ আহসানউল্লাহ বলেন, ‘১৫ দিন আগে ভুক্তভোগী ও তার মা বিদ্যালয়ে এসে ঘটনার বিস্তারিত জানান। তবে এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শাহনেওয়াজ সরকার ঘটনাটি মিথ্যা বলে আমার কাছে দাবি করেন।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আসলাম হোসাইন লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই শিক্ষক যদি এ রকম অন্যায় কাজ করে থাকেন তবে তিনি কোনোভাবেই পার পাবেন না।’
Discussion about this post