‘আমরা দুঃখিত কিন্তু ভারতে ইলিশ পাঠাতে পারব না’। অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ-১৮-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন।
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে ফরিদা আখতার বলেন, ‘ইলিশ দামি মাছ। এ মাছ ভারতে চলে যাওয়ায় আমাদের এখানে নাগালের বাইরে দাম থাকে। সাধারণ মানুষ তা খেতে পায় না। আমরাও দুর্গাপূজা উদ্যাপন করি, আমাদের জনগণই তা উপভোগ (খেতে) করতে পারে।’
দুর্গাপূজায় ভারতে ইলিশ উৎসবের রেওয়াজ চলমান ছিল বেশ কয়েক দশক ধরেই। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে পদ্মার ইলিশের জন্য তাই মুখিয়ে থাকত পশ্চিমবঙ্গের মানুষ। সম্প্রতি শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর এ ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়ে।
সম্প্রতি ইলিশ পাঠানোর আবদার করে বাংলাদেশকে যে চিঠি দেওয়া হয়, সেটিরও কোনো জবাব পায়নি কলকাতা। এ অবস্থায় আসন্ন দুর্গাপূজায় বাংলাদেশের ইলিশ নিয়ে হতাশ পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশে ইলিশের ব্যাপক চাহিদা এবং রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্গাপূজার আগে শুভেচ্ছার নামে ভারতে কমপক্ষে চার হাজার টন ইলিশ পাঠাত। এর সমালোচনা করে ফরিদা আক্তার বলেন, ‘এর দরকার ছিল না। তার (শেখ হাসিনা) এটা করা উচিত হয়নি। শুধু ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্কের স্বার্থে তিনি বাংলাদেশের জনগণের চাহিদার সঙ্গে আপস করেছেন।’
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমান বাংলাদেশ পরিস্থিতিতে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। এ মুহূর্তে ভারত নতুন কোনো ইস্যু তৈরি করতে চায় না। কিন্তু মনে হচ্ছে, ইলিশ শুধু মাছ নয়। এর সঙ্গে অন্যান্য বিষয় জড়িত। আলাপকালে তিস্তার পানিবণ্টন ইস্যু উঠে আসে। এ প্রসঙ্গ টেনে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি মনে করি, ভারত সরকারকে এই বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক এতটা নাজুক হওয়া উচিত নয় যে, ইলিশ রপ্তানি না হলে এর প্রভাব পড়বে। ভারত যদি পরিস্থিতির উন্নতি চায় তবে তিস্তা সমস্যার সমাধান করা উচিত।’
বাংলাদেশে বিশ্বের ৭০ শতাংশ ইলিশের মজুত রয়েছে। এর মধ্যে পদ্মা নদীতে পাওয়া ইলিশ সবচেয়ে সুস্বাদু বিবেচিত। ভারতের নদী ও সমুদ্র জলসীমায় অল্প পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়ে। তা দিয়ে তাদের বিশাল চাহিদা পূরণ অসম্ভব। তাই ভারতবাসী বিশেষ করে কলকাতার বাসিন্দারা পদ্মার ইলিশের জন্য মুখিয়ে থাকেন।
Discussion about this post