আমদানি নির্ভর সংযুক্ত আরব আমিরাতে কর্মী প্রেরণ করে দেশটির নির্মান, প্রযুক্তি, শিক্ষা এবং উন্নয়ন অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বাংলাদেশিরা। এছাড়াও কৃষি জাত পণ্য, উৎপাদনশীল খাদ্য পণ্য, পোশাক, সুগন্ধির কাচা মাল, পরিশোধিত ভোজ্য তেল ইত্যাদি আমিরাতের বাজারে রপ্তানির মাধ্যমে দেশটির প্রয়োজন মেটাচ্ছে তেমনই বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।
বাংলাদেশ-ইউএই’র দীর্ঘ কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণ জয়ন্তীকে স্বরনীয় করে রাখতে এবং বাংলাদেশের ৫৪ তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপনে এক জমকালো আয়োজন করে বাংলাদেশ দূতাবাস, আবুধাবি।
মঙ্গলবার (২১ মে) সন্ধ্যায় ইউএই’র রাজধানী আবুধাবির ইন্টারকন্টিনেন্টালে সাংস্কৃতিক আয়োজনের পূর্বে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর।
এসময় রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর বলেন, আমাদের এই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আগামী বছর থেকে অংশীদার পর্যায়ে উন্নীত করতে যাচ্ছি। আগামী জুলাই মাস থেকে আমিরাতের সঙ্গে আমাদের অংশীদারি চুক্তির কার্যক্রম শুরু হবে।
অনুষ্ঠানে যোগদেন দুবাইয়ে নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল জেনারেল বি এম জামাল হোসেন, বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক ও প্রবাসী ব্যাবসায়ীরা।
গত মার্চ এ বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ এর সাথে ইউএই’র পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান এর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক ও বিনিয়োগ সম্পর্কের অংশীদারত্ব বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন উভয় মন্ত্রী।
এছাড়াও আবুধাবিতে গত ৭ মে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের বৈদেশিক বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী ড. থানি বিন আহমেদ আল জাইউদির সঙ্গে এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে গভীর অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে গুরুত্বদেন উভয় মন্ত্রী।
রাষ্ট্রদূত বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক বহুস্তর বিশিষ্ট। বিশেষ করে, এই দেশের সঙ্গে আমাদের শিক্ষা, সাংস্কৃতি, প্রযুক্তি, বাণিজ্য, অর্থনীতি ও কূটনৈতিক সম্পর্ক অন্যতম। আমাদের রাজনৈতিক ভাবেও সুসম্পর্ক রয়েছে। আমাদের এই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আগামী বছর থেকে পার্টনারশিপ পর্যায়ে উন্নীত করতে যাচ্ছি। আগামী জুলাই মাস থেকে এ দেশের সঙ্গে আমাদের পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্টের কার্যক্রম শুরু হবে।
এসময় তিনি দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধুর আরব আমিরাত সফর করেন। সে সময় তিনি আমিরাতি জাতীর জনক শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন। তখন এই দুই দেশের প্রতিষ্ঠাতা তথা দুই জাতিরজনক এক বন্ধুপ্রতিম কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। যার ফল আমরা আজ ভোগ করছি।
আবুধাবিতে রাষ্ট্রীয় উচ্চপর্যায়ের জমকালো আয়োজনে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফরের আমন্ত্রণে গেস্ট অব অনার ছিলেন ইউএই’র পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী সুলতান আল শামসি। এছাড়াও আবুধাবিতে নিযুক্ত বিভিন্ন দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ, স্থানীয় ব্যবসায়ী প্রতিনিধি এবং দেশটিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিসহ শতাধিক অতিথি উপস্থিত ছিলেন। এতে বিভিন্ন দেশের ৮৫ জন কূটনীতিক অংশ নিয়েছেন বলেও জানায় দূতাবাস সূত্র।
Discussion about this post