আজকে এমন একটি সময়ে আমরা মে দিবস পালন করছি যখন সারাদেশের মানুষ ন্যূনতম অধিকার থেকেও বঞ্চিত। জাতি দানবের শাসনে কবলিত। দেশনেত্রী আজ বন্দী। যে মানুষটি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সেও নির্বাসিত। আজকে এই দিনেও মানুষ গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে রাজপথে সংগ্রাম করছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার বিকালে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে মহান মে দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদল আয়োজিত এক শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, `দুঃখ হয় যখন প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাম-ডান একসাথে হয় সরকার সরানোর চেষ্টা করছে। অতি বাম-অতি ডান নয়। কি এমন ঘটেছে যে আমাদের উৎখাত করতে চায়?” আজকে সব মানুষ মনে করছে তাদের অধিকার লুট করা হয়েছে, কেড়ে নেওয়া হয়েছে বাকস্বাধীনতা। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলছেন, আমাদের অপরাধ কি? আপনাদের অপরাধ হলো আপনারা জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছেন। ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে দেশ পরিচালনা করছেন। আপনাদের অপরাধ হলো লুটপাট করে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে ফোকলা বানিয়ে ফেলেছেন।’
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, সরকার সংসদে বিল পাশ করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করতে চায় না। তারা জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়ে কন্ঠ রোধ করে একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করতে চায়। আজকে অধিকার ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে শুধু বিএনপির নয়, সকল দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক শক্তি এক হয়েছে। বিএনপিকে ধ্বংস করা যাবে না। বিএনপি হচ্ছে ফিনিক্স পাখির মত। বিএনপি অতীতেও পরাজিত হয়নি, ভবিষ্যতেও পরাজিত হবে না।
ফখরুল বলেন, চলমান আন্দোলন বিএনপির একার সংগ্রাম নয়, সকলের। আমরা জনগণের অধিকার পূণঃপ্রতিষ্ঠা করতে চাই। শ্রমিকরা আজ পদে পদে লাঞ্ছিত হচ্ছে। তাদের সন্তানরা ভালো স্কুলে লেখাপড়া করতে পারে না, ভালো খেতে পারে না। আর এই বৈষম্য সৃষ্টি করেছে সরকার।
তিনি আরও বলেন, আজকে আবারও জ্বালানী তেলের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। নিজেদের লোকদের সুবিধা দিতে আবারও জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে। মানুষকে কিভাবে অশান্তিতে রাখা যায়, কষ্টে রাখা যায় সরকার তাই করছে। ৬০ লক্ষ বিরোধী নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা। বিরোধী নেতাকর্মীদের ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানে হামলা হচ্ছে, দোকানপাট লুট হচ্ছে। এখন আর চুপ থাকলে চলবে না। সকল রাজনৈতিক দল, মত সকলকে অধিকার ফিরিয়ে আনতে রাজপথে আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
সমাবেশ শেষে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে বিজয়নগর হয়ে পল্টন মোড় ঘুরে দৈনিকবাংলা হয়ে ফকিরাপুল মোড় হয়ে আরামবাগ ঘুরে পুনরায় নয়াপল্টন বিএনপি কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। তীব্র তাপদাহে উপেক্ষা করে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী সমাবেশে অংশ নেন।
জেআই/
Discussion about this post