ছবিতে পাশের এই ভদ্রলোকের নাম আবদুল মোতালেব। তার একটি বিশেষ গুণের কথাই বলতে চাই। সম্প্রতি দুবাইয়ের বাংলাদেশ কনস্যুলেট থেকে তাকে রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। কয়েকটি ক্যাটাগরিতে সেদিন এই অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন প্রায় অর্ধশত প্রবাসী বাংলাদেশি।
বৈধ পথে দেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য পেশাজীবী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিক্ষক, ব্যাংকার, সাধারণ কর্মী, ব্যবসায়ী, কনসালটেন্ট, সাংবাদিক ও নারী পেশাজীবী রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের এ সম্মাননা প্রদান করা হয়েছিল। সেদিন সবার সাথে মঞ্চে সম্মাননা প্রাপ্তিতে হেসেছেন মোতালেবও।
তিনি একজন সাধারণ প্রবাসী। তবে কেন তিনি পেলেন এই সম্মাননা ? -এমন প্রশ্ন কি হৃদয়ে জাগে !
শারজাহ প্রবাসী মোতালেবের প্রশংসা করে শনিবার রাতে কনসাল জেনারেল বি এম জামাল হোসেন জানান সেই গল্প।
মোতালেব প্রতিমাসে পরিবারের জন্য দেশে টাকা পাঠান। তার মাসিক বেতনও স্বল্প। ১২ মাসের মধ্যে তিনি দেশে ১২ বার টাকা পঠিয়েছেন। অর্থাৎ প্রতিমাসে একবার করে রেমিট্যান্স পাঠান তিনি। প্রতিবারই প্রায় একই অংকের রেমিট্যান্স ছিল। ৪০০ দিরহামের কাছাকাছি। ব্যাংকের মাধ্যমে তার এই লেনদেন হওয়ায় বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণকারী হিসেবে মোতালেবের নামও ওঠে আসে অ্যাওয়ার্ডের তালিকায়।
প্রসঙ্গ টেনে কনসাল জেনারেল বলেন, ‘মোতালেবদের কেউ সংবর্ধনা দেয় না। আমরা অচলায়তন ভাঙতে পেরেছি। আমরা এমন রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের সম্মানিত করতে চাই। যারা প্রতিনিয়ত বৈধ পথে দেশে রেমিট্যান্স প্রেরণ করছেন। পরিবারের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি দেশের কল্যাণেও নিবেদিত রয়েছেন।’
মজার ব্যাপার হলো- রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড পাবার পর মোতালেব দেশে গেলে তাকে স্থানীয়রাও সম্মানিত করে, সংবর্ধনা দেয়। প্রবাসে থেকে রেমিট্যান্স প্রেরণ করায় তার অবদানকে মূল্যায়ন করলেন স্থানীয়রা। মোতালেবের বাড়ি ফেনী পরশুরাম এলাকায়। প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর ধরে তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতে রয়েছেন। একটি প্রতিষ্ঠানে সেলস অ্যান্ড সার্ভিসে কাজ করছেন। ফেনী শহরে থাকে তার পরিবার। তিন ছেলের জনক তিনি।
দেশপ্রেম লালন করা মোতালেব জানান, কখনও হুন্ডিতে টাকা পাঠান না এই প্রবাসী। এমন গর্বিত প্রবাসীদের সঙ্গে পরিচিত হতে পেরে নিজের আনন্দ বেড়ে যায়।
আমার বিশ্বাস, প্রত্যেক প্রবাসীর জন্য মোতালেব একজন উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হতে পারেন। যার দেখাদেখি বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে আরো উৎসাহিত হবেন প্রবাসীরা।
কামরুল হাসান জনি
Discussion about this post