বাংলাদেশের ইতিহাসে হজের সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্যাকেজ তৈরি করা হয়েছে এ বছর। সরকারি ও বেসরকারি হজ প্যাকেজে প্রায় ৭ লাখ টাকার মতো খরচ ধরা হলেও কোরবানি ও খাবার বাবদ ৮ থেকে সাড়ে ৮ লাখ টাকা খরচ হবে একজন হজযাত্রীর। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হজের এমন খরচ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ অস্বাভাবিক বিমান ভাড়া। তারা বলছেন, যৌক্তিক কারণ ছাড়াই শুধুমাত্র অতিরিক্ত লাভের আশায় ৩০ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
২০২৩ সালে সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করতে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা। গত বছরের চেয়ে এবার উভয় প্যাকেজেই বেড়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। এদিকে, ইন্দোনেশিয়ার হজযাত্রীরা বাংলাদেশি মাত্র দুই লাখ ৩৮ হাজার ৪৫৩ টাকা খরচ করে হজ করতে পারবেন। বাকিটা সরকার ভর্তুকি দেবে।
চলুন দেখে নেওয়া যাক কোন দেশের হজযাত্রীদের হজের খরচ কেমন
• ভারত
আনন্দবাজার পত্রিকা ২০২০ সালের নভেম্বরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, ২০১৯ সালে পশ্চিমবঙ্গ থেকে হজে যেতে জনপ্রতি খরচ হয়েছিল বাংলাদেশি প্রায় তিন লাখ টাকা। তবে ওই সময় পশ্চিমবঙ্গ হজ কমিটি ২০২১ সালের হজের খরচ অনেক বাড়িয়ে চার লাখ ২৩ হাজার ৫৭১ টাকা নির্ধারণ করেছিল। আর এ বছর হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হলেও এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত খরচের হিসাব জানানো হয়নি। ২০১৮ সালে ভারতে হজ ভর্তুকি বন্ধ করে দেয়া হয়।
• পাকিস্তান
পাকিস্তানে এ বছর হজের চূড়ান্ত খরচ এখনও জানানো হয়নি। তবে দেশটির ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুহাম্মদ উমর ভাট গত শনিবার জানান, এবার জনপ্রতি খরচ বাংলাদেশি তিন লাখ ১১ হাজার ৭৪২ টাকা থেকে প্রায় সাড়ে চার লাখ বাংলাদেশি টাকা হতে পারে।
• ইন্দোনেশিয়া
এ বছর ইন্দোনেশিয়া থেকে হজে যেতে একজন মুসল্লিকে দুই লাখ ৭৩ হাজার ৮৭০ বাংলাদেশি টাকা (৩ কোটি ৯৮ লাখ ৮৬ হাজার ৯ ইন্দোনেশীয় রুপি) দিতে হবে বলে গত ১৪ এপ্রিল জানান দেশটির ধর্মমন্ত্রী ইয়াকুত ছলিল। যদিও মুসল্লি প্রতি খরচ হবে চার লাখ ৮৮ হাজার ২৬০ টাকা। বাকি টাকা ‘হজ ফাণ্ড ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি ’ বা বিপিকেএইচ’র মাধ্যমে ভর্তুকি হিসেবে দেবে সরকার।
• মালয়েশিয়া
গত ২২ এপ্রিল হজে যাওয়ার খরচ ঘোষণা করা হয়। বি ৪০ গ্রুপের (যে পরিবারের মাসিক আয় সাড়ে ৯৬ হাজার টাকার কম) মুসল্লিদের জন্য খরচ দুই লাখ ১৮ হাজার ৭৫৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর যাদের আয় বেশি তাদের খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে দুই লাখ ৫৮ হাজার ৬০০ টাকা।
দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ধর্ম বিভাগের মন্ত্রী ইদ্রিস আহমাদ সম্প্রতি জানান, প্রতি বছর হজ ভর্তুকি হিসাবে সরকার প্রায় ছয়শ থেকে আটশ কোটি টাকা খরচ করে থাকে।
• আসিয়ানে সর্বনিম্ন খরচ ইন্দোনেশিয়ায়?
২০১৯ সালে ইন্দোনেশিয়ার তৎকালীন ধর্মমন্ত্রী লুকমান হাকিম দাবি করেছিলেন, আসিয়ান অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ইন্দোনেশিয়া থেকে হজে যেতে একজন মুসল্লিকে সবচেয়ে কম টাকা খরচ করতে হয়। ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর ব্রুনাই, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া থেকে হজে যাওয়ার খরচ উল্লেখ করে তিনি এই দাবি করেছিলেন।
ডয়েচে ভেলে
Discussion about this post