দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রির ক্ষেত্রে দাম আরও ১ টাকা বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর ফলে বুধবার থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৯৭ টাকা দরে প্রতি ডলার বিক্রি করেছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রতি ডলারের দাম ছিল ৯৬ টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের দাম বাড়ালেও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে ডলারের দাম বাড়েনি। আমদানির জন্য প্রতি ডলার সর্বনিম্ম ১০১ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০৭ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এখন বেসরকারি ব্যাংকগুলোর চেয়ে সরকারি ব্যাংকগুলোই বেশি দামে ডলার বিক্রি করছে। কেননা সরকারি ব্যাংক বেশি দামে রেমিটেন্স কিনে ডলার কেনার ব্যয় বাড়িয়ে দিয়েছে। বেসরকারি ব্যাংকগুলো তুলনামূলক কম দামে রেমিটেন্স কিনছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক এর আগে গত ১২ সেপ্টেম্বর ডলারের দাম বাড়িয়েছিল ১ টাকা। ওই সময়ে ৯৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৬ টাকা করেছিল। এক মাস পর তারা আবারও ডলারের দাম বাড়াল।
বর্তমানে বাণিজ্যিক ব্যাংকের চেয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ডলারের দাম প্রায় চার থেকে ১০ টাকা কম। যে কারণে বাজারে সমতা আনার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের দাম বাড়িয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরও বাড়িয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছাকাছি নিয়ে যাবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও আমদানির জন্য ডলারের দামের ব্যবধান ৫ পয়সার মধ্যে নিয়ে আসবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বুধবার বাড়তি দরে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ৮ কোটি ডলার বিক্রি করেছে। আমদানির দেনা পরিশোধের জন্য এসব ডলার বিক্রি করেছে।
সূত্র জানায়, গত অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে ৭ কোটি ডলার বিক্রি করেছে। চলতি অর্থবছরের এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন মাসে ৪ কোটি দুই লাখ ডলার বিক্রি করেছে। ফলে রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। বুধবার রিজার্ভ ছিল তিন হাজার ৬৪৪ কোটি ডলার।
গত জানুয়ারিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে প্রতি ডলার গড়ে ৮৬ টাকা করে বিক্রি হয়েছিল। এখন বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১০৭ টাকা করে।
এ দিকে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স (এবিবি) রপ্তানি বিল নগদায়নে ডলারের দাম সর্বোচ্চ ৯৯ টাকা ও বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো থেকে রেমিট্যান্স সংগ্রহে সর্বোচ্চ ১০৭ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করেছে। আগে রেমিটেন্সের দর ছিল ১০৮ টাকা। এর আগে সরকারি ব্যাংকগুলো ১১১ টাকা করে রেমিটেন্স কিনেছে। রেমিটেন্সের দাম কমানোর ফলে গত সেপ্টেম্বরে এর প্রবাহ কমে গেছে। ইউরোপ ও আমেরিকায় মন্দায় কারণে রপ্তানি আয়ও কমছে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে সংকট আরও প্রকট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
Discussion about this post