সিলেটে চলমান বন্যার মধ্যে নৌকার অস্বাভাবিক ভাড়া দাবির ঘটনা প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। এর পাশাপাশি বন্যাকবলিত স্থানগুলোতে মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলায় সরকারের পদক্ষেপ আরও জোরদার করার আহ্বান জানানো হয়। আজ শনিবার এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
গণমাধ্যমের সূত্র উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এত বড় বিপর্যয়ের মধ্যে সবাইকে মানবিকতার সঙ্গে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। কিন্তু পানিবন্দী মানুষকে উদ্ধার করার জন্য সেখানে নৌকার কিছু অসাধু মালিক ও মাঝিরা নৌকাভাড়া ৮০০ টাকার পরিবর্তে ৫০ হাজার টাকা চাচ্ছেন। মারুফ আহমেদ নামের এক ব্যক্তির বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে উল্লেখ করা হয় যে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে গ্রামের বাড়ি থেকে সিলেট শহরে নিয়ে আসতে গিয়ে গতকাল শুক্রবার বিকেলে এমন অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মুখোমুখি হন তিনি। ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে রাজি হলেও নৌকার মাঝি রাজি হননি।’
বিবৃতিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম বলেন, সিলেট, সুনামগঞ্জ, কুড়িগ্রামসহ বন্যাকবলিত স্থানগুলোতে মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলায় সরকার কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপ আরও কার্যকর করা দরকার। এসব পদক্ষেপ দ্রুত বাস্তবায়নের পাশাপাশি এসব কাজের মূলে মানবাধিকার সুরক্ষার বিষয়টি বিবেচনায় রাখা দরকার।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বিদ্যুৎ না থাকায় মোমবাতির চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ৫ টাকার মোমবাতি ৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানা যায়। সর্বকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় সবাই মানবিক আচরণ করবে এটাই কাম্য। এ ধরনের অমানবিকতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বরং এটি অন্যায়।
এ ক্ষেত্রে সার্বিক নজরদারি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সিলেট জেলা প্রশাসনকে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলেও জানানো হয় বিবৃতিতে।
বন্যাকবলিত স্থানগুলোতে খাদ্য, পানি, বিদ্যুৎ–সংকট মোকাবিলায় ও পানিবন্দী মানুষকে দ্রুত উদ্ধার করার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতি আহ্বান জানায় কমিশন। পাশাপাশি এসব কার্যক্রমে নারী, শিশু, বৃদ্ধ, অসুস্থ, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার ও আশ্রয়কেন্দ্রে এসব মানুষের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। বিশেষত পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও নারীদের জন্য আলাদা টয়লেটের ব্যবস্থা থাকা জরুরি বলে উল্লেখ করা হয়। আর এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়ার কথা জানানো হয় বিবৃতিতে।
Discussion about this post