একাকিত্ব, আবেগ, কষ্ট, উদাসীনতা, নীরবতা কান্নার অপর নাম প্রবাস জীবন। অনুভূতিগুলো ধারণ করাও কারও পক্ষে সম্ভব না। প্রবাসীরাই এগুলো বেশি অনুভব করে। এখানে কেউ দুঃখ পায় না, কারণ দুঃখ পেতে আপনজন প্রয়োজন হয়।
প্রবাসীরা বাংলাদেশের সূর্য সন্তান। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে দেশ পাচ্ছে বিলিয়ন বিলিয়ন রেমিট্যান্স। আমাদের পরিবারগুলো আছে বেশ হাসি-খুশিতে। অথচ একজন প্রবাসীর প্রতিটি মুহূর্ত কাটে একাকিত্বের বিষাদে। মা-বাবা, ভাই-বোন, ছেলে-মেয়ে, স্ত্রীকে রেখে চলে একাকিত্বের লড়াই।
একাকিত্বের কারণেই অনেক সময় অনেক ছোট সমস্যাগুলোও অনেক বেশি অস্থির ও যন্ত্রণা দেয়। আর প্রবাসীদের তার আপনজন বা প্রিয়জন কষ্ট দিলে সেটা সহ্য করার ক্ষমতা সে হারিয়ে ফেলে। অনেকে একাকিত্বের কারণে আত্মহত্যাও করে। প্রবাসীরা তাদের আপনজন কত ভালোবাসে সেটা শুধু সে নিজেই জানে।
মাঝে মধ্যে দেশে চলে যেতে মন চাইলেও যাওয়া যায় না পরিবারের কথা ভেবে। নিজেদের সকল চাওয়া-পাওয়া ভুলে পরিবারের হাসি-খুশির জন্য পড়ে থাকি একাকিত্বকে সঙ্গী করে। সকালে ঘুম থেকে উঠে রাত অবধি কাজ। বাসায় এসে রান্না করে ফ্রেশ হয়ে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে পরিবারের সঙ্গে একটু কথা। এরপর শুয়ে পড়া তারপর আবার সেই সকাল এভাবেই চলে প্রবাসীদের জীবন।
সুখের সময়টা তাদের এভাবেই শেষ হয়ে যায়। অনেক সময় মন খারাপ হয় কিংবা শরীরটা ভালো থাকে না তখন মনটা প্রিয়জনকে কাছে পেতে ইচ্ছে হয় কিন্তু পায় না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চাকরি করার পূর্বে শপথ নেন আমি আমার দেশকে জীবন দিয়ে হলেও রক্ষা করবো, দেশের উন্নতিতে কাজ করবো আরও অনেক কিছু সেগুলো আমরা সবাই জানি।
আর প্রবাসীরাও সে একই শপথে দেশের জন্য কাজ করে। তাদের হয়তো শপথটা কেউ পাঠ করায় না তারা নিজেরাই মনে মনে পাঠ করে নেই। কারণ প্রবাসীরাও দেশের জন্য অনেক কিছু করছে অক্লান্ত পরিশ্রমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। তারাও ত্যাগ করছে ভালোবাসা, মায়া-মমতা, সময়কে।
দেশের জন্য এমন অক্লান্ত পরিশ্রম করা এই প্রবাসীরাই দিন শেষে একা। তারা অনুভূতি প্রকাশ করার মানুষ তারা পায় না।। শত দুঃখ কষ্ট নিয়েও প্রবাসীরা দেশকে নিয়ে ভাবে। দেশের এই সূর্য সন্তানরা ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল প্রান্তে।
জাহিদুল ইসলাম ফরহাদ,
জাগো নিউজ, সিঙ্গাপুর.
Discussion about this post