৩০ মার্চ কাতার এয়ারওয়েজে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবের জেদ্দা পর্যন্ত যেতে চাইলে ভাড়া গুনতে হবে ১ লাখ ৮ হাজার ২১১ টাকা। বাংলাদেশ বিমানে ২৪ এপ্রিল একই রুটে টিকিটের দাম দেখানো হচ্ছে ১ লাখ ৫ হাজার ৭৩৬ টাকা।
বাংলাদেশ বিমান ও কাতার এয়ারওয়েজের ওয়েবসাইটে একমুখী চলাচলের জন্য টিকিটের এই মূল্য দেওয়া আছে।
করোনার আগে এই ভাড়া ছিল ৩৫-৪৫ হাজার টাকা।
করোনার কারণে দীর্ঘদিন বিমান চলাচল বন্ধ ছিল।
আকাশপথ খুলে দেওয়ার পর হঠাৎ বিমানযাত্রীদের চাপ বাড়তে থাকে।
বিশেষ করে বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বর্তমানে গড়ে প্রতিদিন ৮ হাজারের মতো টিকিটের চাহিদা রয়েছে।
যাত্রীর তুলনায় দেশি-বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর ফ্লাইট সংখ্যা অনেক কম। মধ্যপ্রাচ্যের টিকিটের চাহিদা বৃদ্ধির সুযোগ নিয়ে এয়ারলাইন্সগুলো ‘গলা কাটছে’। এয়ারলাইন্সের অসাধু চক্র ও ট্রাভেল এজেন্টেদের একটি বড় সিন্ডিকেট গত বছরের নভেম্বর থেকে অদ্যাবধি মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন ফ্লাইটের টিকিটের দাম ২-৩ গুণ আদায় করছে।
এ কারণে বেশি সংকটে পড়েছেন মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশি অভিবাসীরা।
আবার গত ১০ দিনে সৌদি দূতাবাস ১ লাখ ভিসা ইস্যু করেছে।
বিমানের টিকিটের অগ্নিমূল্যের সঙ্গে এখন আবার যুক্ত হবে একসঙ্গে এত লোকের সৌদি আরব যাওয়ার চাপ।
সংশ্নিষ্টরা বলছেন, আগামী ২-৩ মাসের মধ্যে পরিস্থিতি ভালো হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
ভাড়ার রাশ টেনে ধরারও যেন কেউ নেই। একাধিক দফায় সংবাদ সম্মেলন করে টিকিটের দাম কমানোর দাবি জানিয়ে আসছে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিস (বায়রা)।
আটাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আবুল কাশেম বলেন, এয়ারলাইন্সগুলো রীতিমতো জুলুম করে যাচ্ছে।
টিকিটের বাড়তি চাহিদার সুযোগ নিচ্ছে সবাই।
ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইএটিএ) আওতাধীন না থাকায় ফ্লাই দুবাই ও এয়ার ইন্ডিয়ার মতো আরও কিছু এয়ারলাইন্স ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য করলেও বাংলাদেশ ব্যবস্থা নিতে পারছে না।
সৌদি যেতে এক লাখ ভিসা যারা পেয়েছেন তাদের চাপও এখন সামলাতে হবে।
বায়রার সাবেক মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান বলেন, কেন পার্শ্ববর্তী দেশের তুলনায় ৩-৪ গুণ খরচ করে আমাদের শ্রমিকরা বিদেশে যাবেন।
এটার উত্তর পাচ্ছি না।
শ্রমিকদের কষ্টার্জিত রেমিট্যান্স এয়ারলাইন্সগুলো খেয়ে ফেলছে।
অভিবাসনে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
এই অবস্থা চলতে থাকলে মধ্যপ্রাচ্যে শ্রমিক যাওয়া কমে যাবে।
গরিব মানুষকে বাঁচাতে হবে।
কতজন দেড় লাখ টাকা খরচ করে সৌদি আরব যেতে চাইবে।
অথচ বিমানের ভাড়া হওয়ার কথা ছিল ৩০ হাজার টাকার মতো।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এয়ারলাইন্সগুলো নিয়ে এখনই বসা দরকার।
তাদের কাছে আমরা ‘লেবার ফেয়ার’ চাই।
Discussion about this post