‘টেকসই উন্নয়নের পথে অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে দুবাইয়ে অনুষ্ঠেয় বৃহত্তর বৈশ্বিক বাণিজ্যিক প্রদর্শনীতে অংশ নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের অংশগ্রহণ ঘিরে প্রবাসীদের মাঝে দেখা দিয়েছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা। প্রায় ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে অবকাঠামো নির্মাণসহ নিজেদের প্যাভিলিয়ন তৈরির কাজও এগিয়ে নিচ্ছে বাংলাদেশ।
১৯২টি দেশের অংশগ্রহণে চলতি বছরের অক্টোবরে বৈশ্বিক এই বাণিজ্যিক প্রদর্শনী ‘এক্সপো-২০২০’র পর্দা উঠবে। ছয় মাসব্যাপী এই মেলায় প্রায় ২৫ মিলিয়ন দর্শনার্থীর অংশগ্রহণের প্রত্যাশা করছে আয়োজক দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত।
বৃহত্তর এই প্রদর্শনীতে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ নিজেদের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন, মানব সম্পদ উন্নয়ন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ, প্রতিযোগিতামূলক ও দক্ষ জনশক্তির প্রাপ্যতা, নারীর ক্ষমতায়ন, জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা, সাফল্যের গল্প, ডেল্টা প্ল্যান, ভিশন-২০২১, ভিশন-২০৪১, সাংস্কৃতিক, পর্যটন সম্ভাবনা, প্রত্মতাত্ত্বিক স্থান, যোগাযোগ ও জীববৈচিত্র্য ইত্যাদি প্রদর্শন করবে। এছাড়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে থাকবে বিশেষ আয়োজন।
এই প্রদর্শনীর জন্য ইতোমধ্যে দুবাইয়ের জেবল আলীর এক্সপো অঞ্চলে বাংলাদেশের দ্বিতল প্যাভিলিয়নে ডিসপ্লে সেন্টার নির্মাণ করা হয়েছে। নিচতলায় ৪৩৬ বর্গমিটার জায়গায় ডিজিটাল প্রদর্শনী ছাড়াও থাকবে অফিস, কনফারেন্স রুম, বি টু বি মিটিং হল। প্যাভিলিয়নের দ্বিতীয় তলায় জায়গা বরাদ্দ রয়েছে ৩৮২ বর্গমিটার। ছয় মাসব্যাপী এই মেলায় অংশ নিতে বাংলাদেশকে প্যাভিলিয়ন ভাড়া গুণতে হবে ৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
দুবাই ও উত্তর আমিরাত বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল বিএম জামাল হোসেন বলেন, বাংলাদেশের বাণিজ্য বৃদ্ধিতে যে ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার এবারের এক্সপোতে সেই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বেজা, হাইটেক পার্ক অথরিটি, পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ অথরিটির মত যে সমস্ত সংস্থা বাংলাদেশে বিনিয়োগ নিয়ে কাজ করে সেসব সংস্থা এখানে অংশগ্রহণ করবে। তারা তাদের কর্মকাণ্ড তুলে ধরবে। ভিন্ন ভিন্ন কোম্পানি আলাদাভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ না থাকলেও ব্যবসায়িক সংগঠন এফবিসিসিআই, গার্মেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, ইলেকট্রনিক ও প্লাস্টিক প্রোডাক্টের অ্যাসোসিয়েশনগুলোকে মেলায় অংশ নিতে আমরা বেশি উৎসাহিত করছি।
জামাল হোসেন আরও বলেন, ছয় মাসব্যাপী মেলায় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, শিল্পকলা একাডেমি অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে একটি পরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে। যার মাধ্যমে বিভিন্ন দিবস ও বিশেষ দিনগুলোতে বাংলাদেশি শিল্পীদের দিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
আরব আমিরাতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর বলেন, আমরা সারাদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করেছি। এমনকি মহামারির সময়ও আমরা আমাদের রপ্তানিতে ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধির হার ধরে রেখেছি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের টেকসই শিল্পনীতির সুফল পাচ্ছি। বাংলাদেশ এখন সারাবিশ্বে যে মর্যাদার আসন অধিকার করছে, সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেটি এই মেলার মাধ্যমে সারা পৃথিবীকে দেখানো যাবে। তাই বাংলাদেশের অধিকাংশ মন্ত্রণালয় এই মেলায় অংশ নেবে।
উল্লেখ্য, গত বছর দুবাইতে বৃহত্তর এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও করোনার প্রভাবে একবছর পিছিয়ে চূড়ান্ত প্রদর্শনীর সময় নির্ধারণ করা হয়। চলতি বছর অক্টোবরে শুরু হয়ে মেলা চলবে আগামী বছর ৩১ মার্চ পর্যন্ত। মেলায় প্রবেশ টিকিটের মূল্য ধরা হয়েছে ৯৫ দিরহাম।
সমকাল
Discussion about this post