ভারত ও বাংলাদেশ থেকে আসা ভিসা আবেদনে জালিয়াতির ঘটনা ঘটছে। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন দেশটির আইন প্রয়োগকারীরা নতুন এক ক্ষমতা হস্তগত করার চেষ্টা করছে। এ-সংক্রান্ত কিছু অভ্যন্তরীণ নথি কানাডার সম্প্রচার মাধ্যম সিবিসি নিউজের হাতে এসেছে। তাতে দেখা গেছে, কানাডার সরকার গণহারে ভিসা বাতিলের ক্ষমতা চায়।
সোমবার (৩ নভেম্বর) প্রকাশিত প্রতিবেদনে সিবিসি নিউজ জানায়, বিল সি-১২ নামে একটি প্রস্তাব পার্লামেন্টে তোলা হয়েছে। সরকার দ্রুত এটি পাস করার আশা করছে। সেটি পাস হলে গণহারে ভিসা বাতিলের একচ্ছত্র ক্ষমতা পাবে কর্তৃপক্ষ।নথিতে বলা হয়েছে, কানাডার অভিবাসন, শরণার্থী এবং নাগরিকত্ব বিভাগ (আইআরসিসি) এবং কানাডা বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সির (সিবিএসএ) কর্মকর্তারা মার্কিন অংশীদারদের সঙ্গে মিলে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ তৈরি করেছেন। এই গ্রুপের লক্ষ্য হচ্ছে ভ্রমণ ভিসার জাল আবেদনগুলো চিহ্নিত ও বাতিল করা এবং এ জন্য তাদের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
অভ্যন্তরীণ সরকারি নথিতে ভারত ও বাংলাদেশকে ‘নির্দিষ্ট চ্যালেঞ্জিং দেশ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আর এ জন্যই ক্ষমতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়েছে।কিন্তু প্রকাশ্যে ইমিগ্রেশনমন্ত্রী লেনা দিয়াব জানান, মহামারি বা যুদ্ধের কারণে তারা এ ক্ষমতা চাচ্ছেন। তিনি নির্দিষ্ট কোনো দেশের কথা উল্লেখ করেননি।
এদিকে সুশীলসমাজের ৩০টির বেশি সংগঠন এই আইন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মাইগ্র্যান্ট রাইটস নেটওয়ার্কের মতো সংগঠনগুলো বলছে, গণহারে বাতিলের ক্ষমতা সরকারকে গণবিরোধী করে তুলতে পারে।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, কানাডায় পড়াশোনার জন্য আবেদনকারী ভারতীয় শিক্ষার্থীদের ভিসা প্রত্যাখ্যানের হার রেকর্ড পরিমাণে বেড়েছে। চলতি বছরের আগস্টে জমা দেওয়া প্রতি চারটি আবেদনের মধ্যে তিনটিই বাতিল করেছে কানাডা সরকার। অর্থাৎ, প্রায় ৭৪ শতাংশ ভারতীয় শিক্ষার্থীর স্টাডি পারমিট আবেদন খারিজ হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, একসময় ভারতীয় শিক্ষার্থীদের জন্য কানাডা ছিল অন্যতম জনপ্রিয় গন্তব্য। তবে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ওপর নতুন বিধিনিষেধ এবং ভিসা বাতিলের উচ্চ হার অনেককে এখন আবেদন থেকে নিরুৎসাহিত করছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের আগস্টে ভিসা বাতিলের হার ছিল ৩২ শতাংশ, যা ২০২৫ সালের আগস্টে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৪ শতাংশে। একই সময়ে ভারতীয় আবেদনকারীর সংখ্যা ২০ হাজার ৯০০ থেকে কমে ৪ হাজার ৫১৫-এ নেমে এসেছে।
কানাডা সরকার জানিয়েছে, শিক্ষার্থী ভিসা জালিয়াতি ও অস্থায়ী অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে রাখতে দেশটি দ্বিতীয় দফায় আন্তর্জাতিক স্টাডি পারমিটের সংখ্যা কমিয়েছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালে প্রায় ১,৫৫০টি জাল ভর্তি স্বীকৃতিপত্র ধরা পড়ে। নতুন যাচাইকরণ ব্যবস্থার মাধ্যমে গত বছর আরও ১৪ হাজারের বেশি জাল নথি শনাক্ত করা হয়।

























