দশ মাস বয়সী সন্তানকে কেবল ভিডিও কলে দেখেছিলেন মালয়েশিয়া প্রবাসী আবু সাঈদ। একমাত্র সন্তানকে কোলে নিয়ে আদর করবেন বলে ব্যাকুল ছিলেন তিনি। কিন্তু তা আর হল না। লাশ হয়ে দেশে ফিরতে হচ্ছে তাকে।
সাঈদের সহকর্মীদের বরাত দিয়ে পরিবারের সদস্যরা বলেছেন, গ্যাস্ট্রিক ও আলসারের সমস্যায় ভুগতে থাকা সাঈদ একপর্যায়ে হতাশ হয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। গত ৮ জুন মালয়েশিয়া পুলিশ তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে।
পরিবারের সদস্যরা এখন সাঈদের লাশের অপেক্ষায়। তবে লাশ আনার জন্য চেষ্টা করলেও লকডাউন ও ফ্লাইট জটিলতা থাকায় শঙ্কায় পড়েছেন তারা। প্রবাসী সাঈদের বাড়ি ময়নসিংহের ফুলপুর উপজেলায় বালিয়া ইউনিয়নের বেলটিয়া বালিয়া গ্রামে। তার বাবার নাম শামসুল হক।
২০১৪ সালে লটারি জিতে মালয়েশিয়ায় যায় সাঈদ। সেখানে তাইকো কোম্পানিতে শ্রমিকের কাজ করতেন তিনি। প্রবাসে ৬ বছর অবস্থান করার পর ২০১৯ সালে তিন মাসের ছুটিতে বাড়িতে ফিরেন। বিয়ে করেন একই উপজেলার রূপসী ইউনিয়নের নগরবেড়া গ্রামের হাদিসা খাতুনকে। দশ মাস আগে মাশফিয়া আক্তার সাওদা নামে এক কন্যাসন্তান আসে তাদের ঘরে।
সাঈদের চাচা আশরাফ উদ্দিন বলেন, ‘সন্তানকে কাছে পেতে চলতি মাসের শেষের দিকে দেশেও ফেরার কথা ছিল। তার কোম্পানিও সব ব্যবস্থা নিয়েছিল। মাস তিনেক আগে সাঈদ শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে সেখানে চিকিৎসকের কাছে যান। ধরা পড়ে তিনি গ্যাস্ট্রিক ও আলসারে ভুগছিলেন। আমাদের ধারণা আলসারের কারণে পেটে যন্ত্রণা হওয়ায় সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে সে।’
সাঈদের সহকর্মীরা পরিবারকে জানিয়েছেন, ময়নাতদন্ত শেষে সাঈদের লাশ মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর থেকে প্রায় এক হাজার কিলোমিটার দূরে কেড্ডা জেলার লাডাং বাথুলিংতান নামক স্থানে একটি হিমাগারে রয়েছে। সাঈদের বাবা শামসুল হক ছেলের লাশ পেতে সরকারি সহায়তা কামনা করছেন তিনি।
Discussion about this post