শ্যালকের টাকায় দুই ছেলেকে বিদেশে পাঠিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলাম। ছেলেদের উপার্জিত এবং ধার করা টাকায় একটি ভিটাও কিনেছি। তারা বলেছিল, বিদেশ থেকে এসে সেই জায়গায় একটি পাকা ঘর করবে। সেই স্বপ্ন আমার পূরণ হবে না। এর আগেই আল্লাহ আমার বুক খালি করে দুই ছেলেকে আকাশে তুলে নিয়ে গেছে।
কথাগুলো বলছিলেন সৌদি আরবের মদিনায় সোফা কারখানায় আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া লোহাগাড়ার মিজানুর রহমান ও আরফাতুজ্জামান মানিকের বাবা সুলতান আহমদ। সাতকানিয়া উপজেলার লোহাগাড়া সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ সুখছড়ি নাজির আলী পাড়ার বাসিন্দা তারা।
সুলতান আহমদ জানান, গত এক বছর আগে দুই ছেলেকে সৌদি আরবে রেখে আমি দেশে চলে এসেছি। আমি টানা ২৬ বছর বিদেশে থাকলেও আমার টাকায় ছেলেদের নিতে পারিনি। তাদের মামার টাকায় সৌদি আরবে গেছে। ছোট ছেলে মানিক মামার দোকানে চাকরি করত আর মিজান একটি সোফা কারখানায় কাজ করত। গত এক মাস আগে তাদের মামার দোকানটি বন্ধ হয়ে যায়। তখন মিজান তার ছোট ভাই মানিককে সোফা কারখানায় নিয়ে যায়। আর সেই সোফা কারখানায় পুড়ে দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়।
নিহত মিজান এবং আরফাতুজ্জামান মানিকের মা হালিমা বেগম বলেন, একই দিনে দুই ছেলের বিয়ে দেওয়ার ইচ্ছে ছিল। তা আর হলো না। পাকা ঘরে ঘুমানোর স্বাদ আমার পূরণ হলো না। তার আগেই আমার বুক খালি করে আল্লাহর কাছে চলে গেছে মিজান আর মানিক।
উল্লেখ্য, সৌদি আরবের মদিনায় একটি সোফা তৈরি কারখানায় আগুন লেগে অন্তত ছয় প্রবাসী বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যম। বুধবার দিবাগত রাতে মদিনার আল খলিল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
Discussion about this post