রাজধানীর ধোলাইপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ নিয়ে সৃষ্ট অস্থিরতা নিরসনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন কওমি আলেমরা। সেখানে আলোচনা সফল হয়েছে বলে জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের নেতারা।
বৈঠক শেষে হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির নুরুল ইসলাম জিহাদী সাংবাদিকদের জানান, আলোচনা সফল ও সন্তোষজনক হয়েছে, আলোচনা চলবে। তবে এ বিষয়ে মঙ্গলবার বিস্তারিত জানাবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে এ বৈঠক শুরু হয়। চলে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত।
কওমি মাদ্রাসার সম্মিলিত শিক্ষা বোর্ড- হাইয়াতুল উলইয়ার চেয়ারম্যান আল্লামা মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে এতে আলেমরা অংশ নেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ, মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মুসলেহ উদ্দিন গওহরপুরী।
গত ৫ ডিসেম্বর রাজধানীর যাত্রাবাড়ী মাদারাসায় শীর্ষ আলেমদের বৈঠক থেকে ৫ দফা প্রস্তাব জানানো হয়। ওই বৈঠক থেকেই সরকারের সঙ্গে আলোচনার সিদ্ধান্ত হয়। এদিকে বৈঠকে যোগদানের আগে বেফাক মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, মূর্তির বিষয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে আলাপ করেন তারা।
এর আগে গত ১৩ নভেম্বর ইসলামে ভাস্কর্য নির্মাণ নিষেধ দাবি করে এক সমাবেশে তা বন্ধের দাবি তোলেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা মামুনুল হক। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করেন তিনি। সরকারকে হুঁশিয়ার করে এ নিয়ে তিনি বলেছিলেন, ভাস্কর্য নির্মাণ পরিকল্পনা থেকে সরে না দাঁড়ালে তিনি আরেকটি শাপলা চত্বরের ঘটনা ঘটাবেন এবং ওই ভাস্কর্য ছুড়ে ফেলবেন। তার দাবির সমর্থনে এরপর মাঠে নামে ধর্মভিত্তিক কিছু রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠন।
গত শনিবার এরই পরিপ্রেক্ষিতে ভাস্কর্য নিয়ে দেশের চলমান অস্থিরতা ও জাতীয় সংকট বিষয়ে আলেমদের করণীয় শীর্ষক এক বৈঠক হয়। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় ওই বৈঠকে খ্যাতনামা আলেমরা যোগ দেন। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কওমি মাদরাসার শিক্ষা বোর্ড বেফাকের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও আল হাইয়াতুল উলিয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান।
ওই বঠক শেষে বেফাক মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক সাংবাদিকদের বলেন, এ বৈঠকে অংশ নিয়েছেন সারা দেশের খ্যাতনামা আলেমরা। ৫টি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে সবার মতামতের ভিত্তিতে। স্মারকলিপি আকারে সেগুলো প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রেরণ করা হবে। একইসঙ্গে একটি প্রতিনিধি দলের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, মানব মূর্তি বা ভাস্কর্য যেকোনো উদ্দেশ্যে তৈরি করা ইসলামের দৃষ্টিতে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে মানুষের বিশ্বাস ও চেতনার আলোকে কোরআন সুন্নাহ সমর্থিত উত্তম কোনো বিকল্প সন্ধান করাই শ্রেয়। বিকল্প চিন্তা কি প্রশ্নের জবাবে মাহফুজুল হক বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাব আল্লাহর ৯৯ নাম খচিত মুজিব মিনার নির্মাণ করা হোক।
Discussion about this post