যৌতুক না পয়ে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত গৃহবধূর নাম ঐশি খাতুন (২০)। শনিবার সন্ধ্যায় পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের আওতাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে ঈশ্বরদী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বাদি ও নিহত গৃহবধূ ঐশির মা শাহানারা খাতুন জানান, ২০১৯ সালের ২৫ জানুয়ারি পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের চরআওতাপাড়া গ্রামের মাহাবুল ইসলামের মেয়ে ঐশি খাতুনের সাথে পাশের গ্রাম আওতাপাড়া নুরজাহান স্কুল সংলগ্ন হারুন প্রামাণিকের ছেলে জাহিদ হোসেনের (২৫) বিয়ে হয়। বিয়ের সময় নগদ টাকা ও আসবাবপত্র নেন জামাই জাহিদ। এরপরও যৌতুকের জন্য ঐশিকে প্রায়ই মারধর করতেন তিনি। মেয়ের সুখের জন্য এরপর জাহিদকে নগদ ৩ লাখ টাকা এবং ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা মূল্যের একটি মোটরসাইকেল কিনে দেন ঐশির বাবা-মা। এরপরও নগদ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার জন্য স্ত্রী ঐশির ওপর শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন জাহিদ।
মামলার এজাহারে বলা হয, শনিবার বিকেলে আবারো টাকার জন্য ঐশির ওপর নির্যাতন শুরু করে জাহিদ। এ সময় অভিযুক্ত জাহিদ তার মা মরিয়ম (৫০), ভাই মকলেছুর রহমান (৩২) ও ভাবি রেশমা খাতুনের (২৮) সহযোগিতায় পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে ঐশিকে হত্যা করে। পরে ঐশির লাশ ঘরে ফেলে রেখে তারা পালিয়ে যায়। একপর্যায়ে স্থানীয়রা খবর পেয়ে ঐশিকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নিহত ঐশির সাত মাস বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তার স্বামী জাহিদ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাব ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স কোম্পানিতে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত।
ঐশির স্বজনরা অভিযোগ করেন, যৌতুক দাবি করা ছাড়াও অভিযুক্ত জাহিদ পরকীয়ায় লিপ্ত। যার কারণে প্রায়ই স্ত্রী ঐশির সাথে তার ঝগড়া-বিবাদ হতো। তারা বলেন, ঐশির মৃত্যুর পর ফ্যানের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচারণা চালানো হয়।
এ বিষয়ে স্থানীয় সাহাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মতলেবুর রহমান মিনহাজ ফকির জানান, আমি দুপক্ষের দুইরকম কথা শুনেছি। জাহিদুলের লোকজন দাবি করছে- ঐশি আত্মহত্যা করেছেন, আর ঐশির পরিবার থেকে দাবি করছেন- ঐশিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তাই লাশের পরীক্ষা ছাড়া কিছু বলতে পারব না।
ঈশ্বরদী থানার ওসি সেখ নাসীর উদ্দিন জানান, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর নিহত গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পেলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে এবং আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নয়া দিগন্ত
Discussion about this post