সিরিয়া, লেবানন, ইরাক ও ইয়েমেনে গত শনিবারের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে গাজার যুদ্ধকে। আঞ্চলিকভাবে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এসবের মধ্যেই ইসরায়েলি হামলায় গাজায় মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৫ হাজারে। নিউজটি রাইটার্স বরাত জানিয়েছেন খবরের কাগজ
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ১৭৮ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছেন এবং আহত হয়েছেন ২৯৩ জন। সব মিলিয়ে অবরুদ্ধ উপত্যকায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার ১০৫ জনে। আহত হয়েছেন ৬২ হাজার ৬৮১ জন।
এদিকে ইরাকের আল-আসাদ বিমানঘাঁটিকে লক্ষ্য করে একাধিক ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট ছোড়া হয়েছে গত শনিবার শেষ ভাগে। রয়টার্সের প্রতিবেদন বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীকে লক্ষ্য করে ওই হামলা চালিয়েছে ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠী। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য মাথায় আঘাত পেয়েছেন কি না, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।
ওই ঘাঁটি লক্ষ্য করে ছোড়া বেশির ভাগ ক্ষেপণাস্ত্রকে বাধা দেওয়া সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে বাকিগুলো ঘাঁটিতে আঘাত হেনেছে। কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সে মূল্যায়ন চলছে।
অন্যদিকে, সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে এক বাড়িতে বিমান হামলায় ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডসের পাঁচ সদস্য নিহত হন। এ ঘটনায় ইরান ওই হামলার দায় চাপিয়েছে ইসরায়েলের ওপর। অন্যদিকে লেবাননের নিরাপত্তা সূত্র বলছে, তাদের ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলায় ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহর বেশ কয়েকজন সদস্য মারা গেছেন।
শনিবার (২০ জানুয়ারি) গাজা উপত্যকাজুড়ে বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায় ইসরায়েল। দক্ষিণে রাফায় ইসরায়েলি বিমান থেকে লিফলেট ছড়িয়ে ফিলিস্তিনিদের কাছে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের শনাক্ত করার জন্যই ওই সহায়তা চাওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে রয়টার্স।
এদিকে ক্রমেই বাড়তে থাকা আঞ্চলিক উত্তেজনার মধ্যেই ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি জানিয়েছেন, সিরিয়ায় হামলার জন্য ইসরায়েলকে পাল্টা জবাব দেওয়া হবে। দামেস্কের ওই ঘটনাকে অপরাধ হিসেবেও অভিহিত করেন তিনি। ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম আইরিবের বরাতে জানা গেছে এ খবর।
ইসরায়েলের পক্ষ থেকে ওই আক্রমণ নিয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। সাধারণত ইসরায়েল এ রকম আক্রমণ নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করে না। গত তিন মাসে ইসরায়েল একাধিকবার সিরিয়ায় ইরানি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। অন্যদিকে ইরান-সমর্থিত দলগুলো সিরিয়া ও ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের অবকাঠামোতে আঘাত হেনেছে।
গাজা ছাড়াও লোহিত সাগর ঘিরেও বাড়ছে উত্তেজনা। হুতিরা সেখানে বাণিজ্যিক জাহাজকে লক্ষ্য করে আক্রমণ করছে। এতে করে আন্তর্জাতিক জাহাজ চলাচল হুমকির মুখে পড়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠান এড়িয়ে চলা শুরু করেছে ওই অঞ্চল। গোটা বিষয়টি প্রভাব ফেলেছে বৈশ্বিক বাণিজ্যে।
ইয়েমেনে হুতিদের লক্ষ্য করেও যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য হামলা চালিয়েছে। সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান বলেছেন, লোহিত সাগরকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ও হুতিদের পাল্টাপাল্টি আক্রমণ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হচ্ছে যে এটি হয়তো নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আমরা এটি নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।’
আঞ্চলিক ও ইরানি সূত্রগুলো বলছে, ইরান ও হিজবুল্লাহর কর্মকর্তা রয়েছেন ইয়েমেনে। তারা সেখানে জাহাজের ওপর আক্রমণ চালানো নিয়ে কাজ করছেন। তবে হুতিরা ওই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।
সূত্র: রয়টার্স
Discussion about this post