দেশব্যাপী অব্যাহত ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সর্বস্তরের মানুষের প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে। নানান কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে শাহবাগের গণ আন্দোলন থেকে ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। ধারবাহিক কর্মসূচীর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার প্রতিবাদের ১১তম দিনে নারীদের প্রতিবাদী সাইকেল র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে শাহবাগ থেকে এ সাইকেল র্যালি শুরু হয়। সারাদেশে বিভিন্ন ছাত্র, যুব, নারী, পেশাজীবী ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সম্মিলিত ব্যানার ‘ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’র পক্ষ থেকে নয় দফা দাবিতে এ কর্মসূচী পালিত হয়।
সাইকেল র্যালিটি নিউ মার্কেট, সিটি কলেজ, কলাবাগান হয়ে মানিক মিয়া এভিনিউতে এসে পৌঁছায়। এরপর সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়ার এভিনিউ সড়কে সমাবেশ করা হয়।
ধর্ষণ ও নিপীড়নবিরোধী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম এবং নারী মুক্তি কেন্দ্রের নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি মেহেদী হাসান নোবেল বলেন, ধর্ষণ- নিপীড়ন এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে যখন দেশব্যাপী গণজাগরণ গড়ে উঠছে, তখন সরকার রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে একটি আইন জারি করলো। আমরা বলতে চাই শুধুমাত্র আইন করে ধর্ষণ বন্ধ করা যাবে না।
সমাবেশে অন্যান্য বক্তারা বলেন, নারীবিদ্বেষী সকল প্রচার-প্রচারণা বন্ধ করতে হবে। ধর্ষণের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে। পাহাড়ে, সমতলে, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল নারীর প্রতি যেকোনো ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণ ও নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে। সমাবেশে সংহতি জানিয়ে আরো উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৌম্য সরকার, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম।
এদিকে ধারাবাহিক প্রতিবাদ কর্মসূচীর আওতায় শুক্রবার ঢাকা থেকে নোয়খালী লং মার্চ কর্মসূচী পালন করবে আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম ‘ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’। শুক্রবার সকাল ১০টায় শাহবাগ থেকে সমাবেশের মাধ্যমে এর শুরু হবে বলে দৈনিক নয়া দিগন্তকে নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এবং আন্দোলনের অন্যতম মুখপাত্র অনিক রায়।
তিনি বলেন, ধর্ষণ নিপীড়নের বিরুদ্ধে ৯ দফা দাবিতে শুক্রবার আমাদের লং মার্চ হবে ঢাকা থেকে নোয়াখালীর উদ্দেশে। দুই দিনব্যাপী হবে এই লং মার্চ। পুরো লং মার্চে আমরা ১০টা সমাবেশ করবো।
সমাবেশের স্থল জানিয়ে তিনি বলেন, ঢাকা থেকে নোয়াখালীতে যাওয়ার পথে পথে আমরা এই সমাবেশগুলো করবো। এর মধ্যে আমাদের প্রথম সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে ঢাকার শাহবাগে। এর পরে পর্যায়ক্রমে গুলিস্তান, নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া, সোনারগাঁ, চান্দিনা, কুমিল্লা, ফেনী, দাগনভূঞা, চৌমুহনী হয়ে মাইজদীতে সমাবেশের মাধ্যমে সমাপ্ত হবে। যাত্রাপথে উল্লেখিত স্থানগুলোতে পথসভা ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
এ সময় তিনি সকল শ্রেণিপেশার মানুষকে লং মার্চ সফল করার আহ্বান জানান। সেই সাথে ধর্ষণের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার অনুরোধ জানান তিনি।
ধর্ষণের বিরুদ্ধে লংমার্চ সফল করতে উদীচীর আহ্বান: সারাদেশে বিভিন্ন ছাত্র, যুব, নারী, পেশাজীবী ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সম্মিলিত ব্যানার ‘ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’র পক্ষ থেকে নয় দফা দাবিতে লংমার্চ সফল করার আহ্বান জানিয়েছে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। আগামী আজ এবং আগামী ১৭ অক্টোবর ঢাকার শাহবাগ থেকে নোয়াখালী লংমার্চ অনুষ্ঠিত হবে।
লংমার্চ সফল করার জন্য বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় সভাপতি সফিউদ্দিন আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক জামশেদ আনোয়ার তপন সবাইকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।
Discussion about this post