বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে, বিশ্বে ট্রান্সফ্যাট গ্রহণের কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই ঘটে ১৫টি দেশে। এর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বাংলাদেশে প্রতি বছর হৃদরোগে যত মানুষ মারা যায়, তার ৪ দশমিক ৪ শতাংশের জন্য দায়ী ট্রান্সফ্যাট।
বুধবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এ মৃত্যুতে শীর্ষ ১৫ দেশের তালিকায় থাকা যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, লাতভিয়া ও স্লোভেনিয়া ইতোমধ্যে ট্রান্সফ্যাট নির্মূলে ডব্লিউএইচওর সুপারিশ বাস্তবায়ন করেছে। অর্থাৎ সব ফ্যাট (চর্বি), তেল এবং খাবারে প্রতি ১০০ গ্রাম ফ্যাটে ট্রান্সফ্যাটের সর্বোচ্চ পরিমাণ ২ গ্রামে সীমিত অথবা আংশিক হাইড্রোজেনেটেড অয়েলের (পিএইচও) উৎপাদন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। বাকি ১১টি দেশকে তথা বাংলাদেশ, ইরান, ভারত, মেক্সিকো, নেপাল, পাকিস্তান, কোরিয়া, মিসর, আজারবাইজান, ভুটান, ইকুয়েডরকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছে ডব্লিউএইচও।
ট্রান্সফ্যাট বা উচ্চমাত্রায় চর্বি জাতীয় পদার্থ ট্রান্সফ্যাটি অ্যাসিড (টিএফএ) এক ধরনের অসম্পৃক্ত চর্বি, যা ডালডা কিংবা বনস্পতি ঘি নামে আমাদের দেশে পরিচিত। এতে ২৫-৪৫ শতাংশ পর্যন্ত ট্রান্সফ্যাট থাকে। দেশে বেকারিসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্যে উচ্চ মাত্রার ট্রান্সফ্যাট থাকায় এসব খাবার গ্রহণ হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) জানায়, অতি সম্প্রতি ঢাকার শীর্ষস্থানীয় পিএইচও ব্র্যান্ডগুলোর নমুনার ৯২ শতাংশে ডব্লিউএইচওর সুপারিশ করা ২ শতাংশ মাত্রার চেয়ে বেশি ট্রান্সফ্যাট পেয়েছেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষকরা। গবেষণায় ঢাকার পিএইচও নমুনা বিশ্নেষণ করে প্রতি ১০০ গ্রাম পিএইচও নমুনায় সর্বোচ্চ ২০ দশমিক ৯ গ্রাম পর্যন্ত ট্রান্সফ্যাটের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। এ অবস্থায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে সব ধরনের ফ্যাট, তেল ও খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্সফ্যাটের সর্বোচ্চ সীমা মোট ফ্যাটের ২ শতাংশ নির্ধারণ এবং তা কার্যকর করার দাবি জানিয়েছে প্রজ্ঞা।
Discussion about this post