উত্তর প্রদেশে খুন করা হলো এক ট্যাক্সিচালককে। পরিবারের অভিযোগ ‘জয় শ্রীরাম’ না বলায় তাকে খুন করা হয়েছে। পুলিশ অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ট্যাক্সিচালকের নাম আফতাব আলম। বয়স ৪৫ বছর।তিনি প্রথমে ট্যাক্সিতে একজন যাত্রী নিয়ে বুলন্দশহর যান। তাকে নামিয়ে রাতে ফেরার পথে দুই জন যাত্রীকে তোলেন। তাদের হাতেই খুন হন তিনি।
আফতাবের ছেলে সারিব জানিয়েছেন, রাত ৮টা নাগাদ আফতাব তাকে ফোন করেন। তিনি তখন একটি টোল প্লাজার কাছে ছিলেন। তার ধারণা হয়েছিল, তিনি ভুল লোককে ট্যাক্সিতে তুলেছেন। তারপর ফোনটা চালু অবস্থাতেই পাশে রেখে দেন। সারিব কল রেকর্ড করতে শুরু করেন।
সেখানেই শোনা যায়, একজন বলছেন, ‘জয় শ্রীরাম বল’। আরেকজন বলছে, ‘ভাই তু জয় শ্রীরাম বোল’। এর মিনিট পনেরো পরে আফতাবের ফোনের ব্যাটারি শেষ হয়ে যায়। সারিব প্রথমে দিল্লি পুলিশে ফোন করেছিলেন।তারা জানায়, নয়ডায় গৌতম বুদ্ধ নগর থানায় অভিযোগ জানাতে হবে। সেইমতো তিনি নয়ডা পুলিশকে ফোন করেন।
গ্রেটার নয়ডা পুলিশ তারপর গাড়িটি উদ্ধার করে। তখন আফতাব চালকের সিটে। তার মাথায় ভারি জিনিস দিয়ে মারা হয়েছিল। চিকিৎসা করার সময়ই তার মৃত্যু হয়। গাড়ির সওয়ারিরা কেউ ছিল না।
সারিবের দাবি, ‘জয় শ্রীরাম’ না বলার জন্যই তার বাবাকে মারা হয়েছে। অডিও ক্লিপ তার কাছে আছে। সেই অডিও ক্লিপ সামাজিক মাধ্যমে ভাইরালও হয়েছে।
পুলিশ অবশ্য সারিবের কথা মানতে চায়নি। তাদের দাবি, ওই দুই সওয়ারি মাতাল ছিল। তারা ট্যাক্সি চুরি করার মতলবে উঠেছিল। তাদের পরিচয় জানা যায়নি। পুলিশের ধারণা, দুই জনই পাকা অপরাধী। অপরাধ ছাড়া এর পিছনে অন্য কোনো মোটিভ নেই। কিন্তু প্রশ্ন হলো, দুই অপরাধী যদি গাড়ি চুরি করার মতলবে উঠে থাকে, তা হলে তারা গাড়ি চুরি করল না কেন?
ওই দুই ব্যক্তি কাকে জয় শ্রীরাম বলতে বলছিল? পুলিশের ব্যাখ্যা, দুই অপরাধী অন্য কাউকে জয় শ্রীরাম বলতে বলছিল। আফতাবকে নয়।
নয়ডার জোন ২-এর এসিপি রাজীব কুমার বলেছেন, ”আমরা এ ব্যাপারে জানতে পারার পরই দাদরি পুলিশকে সতর্ক করে দেয়া হয়। দাদরির পুলিশই আফতাবের সুইফট ডিজায়ার গাড়ির সন্ধান পায়। চালকের মাথায় আঘাত ছিল। অভিযুক্তরা পলাতক। একটা অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে, জয় শ্রীরাম বলা নিয়ে। কিন্তু সেটা চালককে বলা হয়নি। গাড়ি যখন থেমেছিল তখন দুই অভিযুক্ত অন্য কাউকে ওই কথা বলছিল। এর মধ্যে কোনো সাম্প্রদায়িক বিষয় নেই।” আফতাবের পরিবার অবশ্য মনে করে, সাম্প্রদায়িক কারণেই তাকে খুন করা হয়েছে।
ডয়চে ভেলে
Discussion about this post