৫ মে মঙ্গলবার সৌদি সরকার এক ঘোষণায় জানিয়েছে, যদি কেউ করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের নেয়া পদক্ষেপ ও নির্দেশনা না মেনে চলে, তবে অপরাধ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ১০ লাখ রিয়াল জরিমানা ও ৫ বছরের জেল শাস্তি দেয়া হবে!
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে নেয়া নির্দেশ না মানলে ১০ লাখ রিয়াল জরিমানা!
সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এর নেয়া নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যদি কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান করোনাভাইরাস প্রতিরোধে নেয়া পদক্ষেপ ও সকল নির্দেশনা মেনে না চলেন, তবে এটা গুরুতর অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে, এবং অপরাধ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ১০ লাখ রিয়াল পর্যন্ত জরিমানা ও ৫ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে।
যদি কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি সরকার কর্তৃক দেয়া করোনাভাইরাস প্রতিরোধের নির্দেশনাবলী মেনে না চলেন, তবে ১ হাজার রিয়াল থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১ লাখ রিয়াল, অথবা ১ মাসের জেল থেকে সর্বোচ্চ ১ বছরের জেল অথবা জেল ও জরিমানা উভয় দন্ডে দন্ডিত করা হবে। যদি কোন প্রতিষ্ঠান এই অপরাধ করে তবে জরিমানার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি ৬ মাসের জন্য বন্ধ করে দেয়া হবে। জরিমানা হবার পরেও দ্বীতিয়বার একই অপরাধ করলে দ্বিগুণ জরিমানা করা হবে।
যারা কারফিউ এর মাঝেও চলাফেরা করার পারমিট বা তাসরীহ কে অনুমতিপত্রে বর্ণিত কাজ বাদে অন্য কোন কাজে ব্যবহার করবে, তার অনুমতিপত্র কেড়ে নেয়ার পাশাপাশি ১০ হাজার থেকে ১ লাখ সৌদি রিয়াল জরিমানা করা হবে, অথবা ১ মাস থেকে ১ বছরের জেল অথবা জেল ও জরিমানা উভয় শাস্তি দেয়া হবে।
মেডিকেল আইসোলেশন বা কোয়ারান্টাইন ভঙ্গ করলে ভঙ্গকারীকে সর্বোচ্চ ২ লাখ রিয়াল পর্যন্ত জরিমানা অথবা সর্বোচ্চ ২ বছর পর্যন্ত জেল এর শাস্তি দেয়া হবে। একই অপরাধ দ্বীতিয়বার করলে দ্বিগুণ সাজা দেয়া হবে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোন ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ভাইরাস ছড়ায় বা ছড়ানোর চেষ্টা করে তবে তাকে সর্বোচ্চ ৫ লাখ রিয়াল জরিমানা অথবা ৫ বছরের জেল, অথবা জেল ও জরিমানা উভয় শাস্তিতে দন্ডিত করা হবে। এই অপরাধ দ্বীতিয়বারের মতো করলে শাস্তির পরিমান দ্বিগুণ হবে।
যদি কেউ অনৈতিকভাবে অন্য কাউকে – যার কারফিউ এর মাঝে বের হবার দরকার নেই, তাকে তাসরীহ বা কারফিউ এর মাঝে চলাচলের অনুমতিপত্র পেতে সহায়তা করে, তবে, সাহায্যকারী ১০ হাজার রিয়াল থেকে ১ লাখ রিয়াল পর্যন্ত জরিমানা অথবা ১ মাস থেকে ১ বছরের জেল অথবা জেল ও জরিমানা উভয় শাস্তিই পাবেন। দ্বীতিয়বার আইন ভঙ্গে জরিমানা ও জেলের পরিমান দ্বিগুণ হবে।
যদি কোন অপরাধ উপরিউক্ত বর্ণনার সাথে না মেলে, তবে প্রচলিত আইন অনুসারে অভিযুক্তের বিচার করা হবে। এছাড়াও সৌদি সরকার বিভিন্ন রকমের জমায়েত প্রতিরোধের লক্ষ্যে আইন জারি করার ব্যবস্থা নিচ্ছে। আইন অমান্য করে জমায়েতকারীদের প্রত্যেককে ১ হাজার থেকে ১ লাখ রিয়াল জরিমানা, অথবা ১ মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত জেল, অথবা জেল ও জরিমানা উভয় দন্ডে দন্ডিত করা হবে।
এছাড়াও বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, যদি উপরিউক্ত আইন ভঙ্গকারী কোন বিদেশি নাগরিক অর্থাৎ প্রবাসী হন, তাহলে উপরিউক্ত শাস্তির পাশাপাশি তাকে সৌদি আরব থেকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে, এবং আজীবনের জন্য সৌদি আরবে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হবে।
গতকাল ৫ মে (মঙ্গলবার) থেকেই এই আইন চালু হয়েছে, এবং করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের নির্দেশনা অমান্যকারীরা এই আইন অনুসারে শাস্তি লাভ করবেন। যদি কাউকে জরিমানার পাশাপাশি জেল এর শাস্তি দেয়া হয়, তবে সেই শাস্তি করোনা মহামারী শেষ হবার পরে কার্যকর করা হবে।
এছাড়াও যদি কেউ সাজাপ্রাপ্ত হবার পরে আরোপিত শাস্তির বিরুদ্ধে আপীল করতে চায় তবে বিচার মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ নির্দিষ্ট কমিটি এর কাছে শাস্তির নোটিশ পাবার ১০ দিনের মধ্যে আপীল করতে পারবে।
Discussion about this post