ছোট্ট শিশুটির নাম আয়েশা, বয়স মাত্র দুই বছর। গায়ে সাদা ফ্রক। পরনে নীল হাফ প্যান্ট। দূর থেকে দেখে মনে হচ্ছে বাবার কোলে ঘুমিয়ে আছে সে। কিন্তু কাছে যেতেই দেখা গেল শিশুটি নিথর। ছোট্ট মাথাটি ফেঁটে গড়িয়ে পড়ছে রক্ত। সেই রক্তে লাল হয়ে যাচ্ছে বাবার টি-শার্ট। এক হাতে শিশুটিকে বুকে নিয়ে তিনি ছুটছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশ্যে। আর মুখে বলছেন, ‘আল্লাহু আকবর। আল্লাহু আকবর’।
পরে রাত তিনটার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেছে শিশুটিকে।সন্তানকে মৃত ঘোষণার পর মধ্যরাতে হাসপাতালের বারান্দায় দাঁড়িয়েই জোরে জোরে বিলাপ করছেন আয়েশার বাবা সাজ্জাদুন নূর। বলছেন, ‘ও আমার আয়েশা, তুই কোথায় গেলিরে! আমার মেয়ে তো কিছুই বুঝতো না। তার কি দোষ ছিল? তাকে কেন নিয়ে গেল আল্লাহ।’
এসময় পাশেই ছিলেন সাজ্জাদের স্ত্রী জুবাইদা ফেরদৌস। তিনিও বিলাপ করছিলেন। এসময় বেশ কয়েকবার জ্ঞানও হারান তিনি।বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুর পূর্ব প্রান্তে বোয়ালখালী উপজেলায় কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা পর্যটক এক্সপ্রেসের ধাক্কায় কয়েকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। এ ঘটনায় শিশু আয়েশাসহ তিনজন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচজনচমেক হাসপাতালে এসেছেন ছোট্ট আয়েশার এক আত্মীয় ওয়াহিদ। তিনি সমকালকে বলেন, আয়েশার বাবা সাজ্জাদের বাড়ি বোয়ালখালীর মুন্সিপাড়া এলাকায়। পরিবারটি ঈদ করতে চট্টগ্রাম শহরে যাচ্ছিল। কিন্তু ঈদের আগেই প্রাণ গেল তাদের শিশু সন্তানের।এদিকে উদ্ধার কার্যক্রম শেষে কালুরঘাট সেতুতে দুর্ঘটনা কবলিত ট্রেনটি রাত সাড়ে ৩টার দিকে আবার ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে।
Discussion about this post