জন্মের সার্থকতা প্রমাণ করে দিয়ে চলে গেছেন পরপারে ডা: মঈন উদ্দিন (ইন্না লিল্লাহী ওয়া ইন্না ইলাহি রাজীউন)।
সবাই কাঁদছে আর হেসে হেসেই পাড়ি জমালেন সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্যে তিনি। মুমীনের পরম কাংখিত প্রত্যাশা শাহাদাতের মৃত্য। মহামারি সেই প্রত্যাশিত মৃত্যুর নিশ্চয়তা দিয়েছে তাকে। একজন শহীদের মর্যাদাই আল্লাহর সামনে দাঁড়াবেন তিনি। সেই মৃত্যুর প্রস্তুতিও যেন নিয়েছিলেন আমৃত্যু তিনি।
চারিদিকের অস্থিরতা, লোভ, দায়িত্বের অবহেলা, পেশাদারিত্বের খেয়ানতের মধ্যে এক কাঙ্খিত মানদন্ড ছিলেন তিনি। তার মৃত্যুতে সেকারনে কাঁদছে শক্রও। ইতিবাচক চরিত্রের সুমহান মানুষ ছিলেন তিনি। মানবজীবনে এই চরিত্রই মুখ্য হওয়া উচিৎ। কিন্তু তার বরখেলাফ করেই মোহের মায়াজালে পড়ে দিকভ্রান্ত আমরা। ড: মঈনের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হওয়া ছিল সব মানুষের স্বাভাবিক জীবনধারা। কিন্তু তার বদলে প্রতিনিয়তই ইভিল কারেক্টরে নিজেকে জাহির করতে মরিয়া সমাজের পরিচিত অপরিচিত মানুষ। পরিনামে মানুষ মরতেই হচ্ছে, কিন্তু সেই মানুষ কেঁদে মরছে, আপনজন সহ সবাই হাসছে। যেন মরিয়া অন্যদের বাঁচার পথ সুগম করলো সে।
করোনা কেড়ে নিয়েছে কোয়ালিটি প্র্যাকটিসিং এর প্রমান পুরুষ ডা: মঈনের জীবন। কিন্তু দৈহিক মৃত্যু নিশ্চিত হলেও ‘কীর্তি মানের মৃত্যু নেই’ সেই আপ্ত বাক্য তার জীবনে উদ্ভাসিত থাকবে কেয়ামত পর্যন্ত।
শাহাদাতের মর্যাদায় সৌভাগ্যবান মৃত্যুবরণকারী ডা: মঈনের লাশ ঢাকায় আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের পক্ষ থেকে গোসল ও লাশে কাফন পরানো হবে। বেলা ২টার দিকে এ্যাম্বুলেন্সে করে ডা. মঈন উদ্দিনের কফিনবন্দি লাশ নিয়ে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবেন স্বজনরা। সঙ্গে আছেন স্ত্রী ডা. ইসরাত জাহান। বাংলাদেশ মেডিকেল এ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)-এর মহাসচিব ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল সিলেটে ফেরার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তবে দাফন সিলেট শহরে নাকি তার গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতকে হবে সে বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে পারিবারিকভাবে। করোনা আক্রান্ত হয়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মঈন উদ্দিন আজ বুধবার (১৫ এপ্রিল) ভোর সাড়ে ৪টায় ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন।
প্রসঙ্গত: অসম্ভব মেধাবী মেডিসিন ও ক্যাডিওলজি বিশেষজ্ঞ ডা: মঈন উদ্দিন এফসিপিএস ও এমডি সম্পন্ন শেষে সুনামের সাথে প্র্যাকটিস করেছিলেন তিনি। মৃত্যুকালে পূত্র সন্তান স্ত্রী ডা: ইশরাত জাহান সহ অসংখ্যগুনগ্রাহী রেখে গেছেন ডা: মঈন।
Discussion about this post