বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী নায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় আদালতের নির্দেশে ২৯ বছর পর ২১ অক্টোবর রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই মামলার খবর প্রকাশের পর থেকেই নতুন করে আলোচনায় এসেছে সালমান শাহর মৃত্যু-রহস্য।
বিদেশে অবস্থানরত জনপ্রিয় নায়িকা শাবনূর সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারেন। তিনি জানান, যেহেতু বিষয়টি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন, তাই শুরুতে মন্তব্য করা থেকে বিরত ছিলেন। তবে সম্প্রতি তিনি লক্ষ্য করেছেন, কিছু ব্যক্তি অসৎ উদ্দেশ্যে সালমান শাহ সংক্রান্ত এই মামলার সঙ্গে তার নাম জড়িয়ে ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছেন।
শাবনূর বলেন, “আমার সম্পর্কে এসব গুজব ও অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সবাইকে অনুরোধ করছি, সত্যতা বিবর্জিত তথ্য প্রচার থেকে বিরত থাকুন।”
তিনি স্মৃতিচারণ করে আরও বলেন, “সালমান ছিলো আমার অত্যন্ত প্রিয় সহ-অভিনেতা। আমরা একসঙ্গে প্রায় ১৪টি চলচ্চিত্রে কাজ করেছি। সে ছিলো অসাধারণ প্রতিভাবান, জনপ্রিয় ও শক্তিমান অভিনেতা। নিঃসন্দেহে বলতে পারি, তার সঙ্গে কাজ করেই আমার চলচ্চিত্রজীবন বিকশিত ও উজ্জ্বল হয়েছে।”
শাবনূর জানান, সালমান শাহর অকাল মৃত্যু তাকে ব্যক্তিগতভাবে গভীরভাবে আঘাত করেছে। তাদের জুটির সাফল্য একসময় অনেকের ঈর্ষার কারণ হয়ে উঠেছিল। সালমানের মৃত্যুর পর কেউ কেউ নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের সম্পর্ক নিয়ে নানা গুজব ও বিভ্রান্তি ছড়িয়েছিল, যা তাকে মানসিকভাবে প্রচণ্ডভাবে কষ্ট দিয়েছে।
তবে তিনি দৃঢ়ভাবে বলেন — “সালমান শাহ কিভাবে মারা গেছে তা আমি জানি না। আমি শুধু চাই তার মৃত্যুর সঠিক তদন্ত হোক এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হোক। যে-ই দোষী হোক, তাকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া হোক — এটাই আমার একান্ত দাবি ও প্রত্যাশা।”
শেষে শাবনূর বলেন, “সন্তান হারানোর বেদনা যে কতটা কষ্টের, তা সালমানের মা নীলা আন্টির আহাজারি দেখলেই বোঝা যায়। আমি আন্টি ও তার পরিবারের প্রতি আন্তরিক সহমর্মিতা জানাই এবং মহান আল্লাহর কাছে সালমান শাহর আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।”
বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সালমান শাহ শুধু একজন নায়ক নন — তিনি এক যুগের প্রতীক, এক অনন্ত অনুভূতি। সময় যতই পেরিয়ে যাক, তার মৃত্যুর রহস্য আজও অমীমাংসিত। সহকর্মী ও ভক্তদের একটাই দাবি — ন্যায়বিচার হোক, সত্য প্রকাশ পাক।

























