( প্রেম চিরন্তন!! প্রবাসে বসবাসকারী নারীরা এর বাইরে নয়, দেশে থাকা প্রেমিকের উদ্দেশ্যে, প্রবাসী মেয়েদের নিয়ে আমাদের সমাজের ধারনা নিয়ে ফেসবুকে আবেগময়ী পোস্ট দিয়েছেন আমিরাতে বসবাসকারী এক প্রবাসী নারী, পড়ে দেখুন অনেক অজানা বিষয় জানতে পারবেন। )
আমার সম্পর্কে যাদের অনেক বেশি চুলকানি তাদের উদ্দেশ্য এই লিখনি! আমি দুবাই কেন থাকি? কার সাথে থাকি? আরবীদের ঘরে কামলা দেই না কি করি এতে তোমার মাথা ব্যথা কেন ? তোমার সাথে প্রেম করিনা বলে অন্য মেয়ের কাছে গিয়া বদনাম করো! আমাকে নিয়ে তোমার এত চুলকানি কেন? আমি আরবীদের ঘরেই কামলা দেই তাতে তোমার বাপের কি? আরবীর ঘরের কাজ করাকে পার্ট টাইম জব থেকে অনেক ভালো মনে হয় আমার কাছে।
একটা মেয়ে একা থাকা নিজের বাজার, রান্না, রুম খোঁজা পাঁচ ছয়জন মেয়ের সাথে রুম শেয়ার করা! যারা এক একজন এক এক টাইপের মেয়ে, তাদের সাথে আমার মিলেনা ! আমি এখানের তথাকথিত মেয়েদের মত এত স্মার্ট না! এছাড়া কত কাহিনী তো আছেই এতো শুধু থাকা খাওয়ার ঝামেলা!
এর চাইতে বড় ঝামেলা কয়েক মাস আগেও যখন বাইরে থাকতাম / কাজ করতাম তখন তোর মতোই কিছু লুচ্চা দু’টাকার জমিদার যারা সাত আট বছর প্রবাসে আছে বলে নিজেদের জমিদার মনে করে! তাদের কারনে রাস্তায় বের হলেই নিজেকে কম দামি দোকানের সস্তা পণ্য মনে হতো! বাঙালি মেয়ে দেখলেই তাদের এটা মনেই হয়না যে সব মেয়ে ওই ধরণের নাও হতে পারে, কয়েকটা বাজে কথা আর অশ্লীল অফার দিয়ে বসে থাকো।এসব কথার প্রতিবাদ করতে গিয়ে ঝামেলা কম হয়নি, মান সম্মান হারানোর পাশাপাশি জরিমানা ও দিতে হয়েছে!
অশ্লিলতা পছন্দ না বলে আরবীর ঘরের কাজে আসার আগে এসব ঝামেলা ভালো লাগেনি বলে ভাবছিলাম দেশে চলে যাবো, এক বড় আপু কে বললাম টিকেট’র ব্যাবস্থা করে দেয় দেশে গিয়ে টাকা দিয়ে দিবো, কিন্তু বাড়ি আর যাওয়া হয়নি। আপু বললো একটা কাজ আছে, তুমি চাইলে যেতে পারো, কোনো ঝামেলা নেই এক আরবি মহিলার দেখাশোনা করতে হবে, তার মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে ভদ্রলোক আর ভদ্রমহিলা ছাড়া বাসায় ২জন ডাক্তার ২জন বাঙালি আছে যারা রান্না বান্না আর ঘরের কাজ করে।
আলহামদুলিল্লাহ কোনো মেয়ে ও তার ফ্যামিলিতে এত ভাল থাকবে না আমি নতুন কাজে যেভাবে আছি, কোন কিছুই কমতি নেই, সুখ স্বাধীনতা, মমত্ববোধ আর ভালোবাসা পাচ্ছি সব সময়। আরবিদের বাসায় কামলা দিয়ে অনেক সম্মানের সাথে আছি, এখন আর ওই টেনশনটা নেই। যে কখন কে বাজে অফার দিয়ে বসবে, আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো আছি তাই বলছি আমাকে নিয়ে কে কি বলছো বা ভাবছো তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসেনা! যাদেরকে জীবনেও ছিনি না তাদের কাছে আমার বদনাম করে লাভ নাই ,বরং আমার ভাই বোনের কাছে গিয়ে আমার বিরুদ্ধে নালিশ করো, যাদেরকে অভিযোগ করলে লাভ হবে।
একটা কথা আমি বুঝি না ভাই যারা প্রবাসে থাকে তারা তাদের পরিচয় দিতে বা তাদের কাজের পরিচয় দিতে এত্তো লজ্জা পায় কেন? লজ্জা তারাই পায় যারা লজ্জাজনক কাজ করে আপনার নিজের কি মনে হয় আপনি যে কাজটা করছেন সেটা লজ্জার? প্রবাসী ভাইয়েরা ই যাদের কাছে তোমার পরিচয় দিতে লজ্জা পাচ্ছ তাদের থেকে একটু হলেও তোমার সম্মান বেশি! প্রবাসী মেয়েদের কথা কি বলবো? প্রবাসী মেয়েদেরকে তো ভালো ফ্যামিলির বা ভালো মেয়ে বলে মনেই করে না অনেকে!
প্রবাসে থাকা সব মেয়েই খারাপ সেটা কখনোই ঠিক নয়! নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলান ! না হয় অন্যের বিষয়ে নাক গলানো ছেড় দিন।
Discussion about this post