নওশাদ জামিল:
যারা বলেন টিভি নাটক মরে গেছে, তাদের বলি, ‘আয়েশা’ নাটকটি দেখতে পারেন। দীর্ঘ এগারো বছর পর নাটকটি নির্মাণ করলেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী; স্বভাবত তাই ব্যক্তিগত প্রত্যাশা ছিল, নাটকটি দেখে আমার সেই প্রত্যাশা পুরণ হয়েছে পুরোপুরিভাবেই।
আনিসুল হকের ‘আয়েশামঙ্গল’ উপন্যাস যারা পড়েছেন, তাদের নতুন করে গল্পটি বলার কিছু নাই। আমার আসলে বলার বিষয়, নাটকটির মেইক এন্ড মেইকিং নিয়ে। সাহিত্যকর্মকে মঞ্চে কিংবা সেলুলয়েডে দৃশ্যায়ণ সহজ নয়, বড় কঠিন কাজ। ফারুকী সেই কঠিন কাজটা করেছেন দারুণভাবেই। ক্যামেরার ব্যবহার, সংলাপ, লোকেশন বাছাই ছিল সত্যিই নান্দনিক। ক্যামেরার লেন্স, ফোকাস ও ডাইমেনশন ছিল দুর্দান্ত, স্মার্টলি তা পরিচালনা করেছেন ফারুকী; সত্যিই তার কারিগরি কারিশমা অনুকরণীয়।
বিমানবাহিনীতে ঘটে যাওয়া লজ্জাজনক ঘটনা নিয়ে নাটক। স্পর্শকাতর বিষয়, ফলে তার নির্মাণ ছিল চ্যালেঞ্জিং। কিন্তু ফারুকী সেই চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করে গেছেন নির্মাণের মুনশিয়ানা দিয়ে, মেইকিংয়ের ম্যাজিক দিয়ে। আমার মনে হয়, সেটা সম্ভব হয়েছে তার নিজস্ব স্টাইলের জন্যই।
ফারুকী তার নিজের কাজের একটা স্বতন্ত্র সুর ও স্বর তৈরি করেছেন। নির্মাণ করেছেন নিজস্ব ভিস্যুয়াল ভাষা। আরদশজন ডিকেক্টর থেকে তার নির্মাণ কৌশল যেমন আলাদা, তেমনই স্বতন্ত্র তার প্রতীক ও ইমেজের ব্যবহার। ধ্রুপদী ধারার মধ্য দিয়ে, আধুনিক কলাকৌশল ব্যবহারের মধ্য দিয়ে ফারুকী তার কাজে একটা মহাকাব্যিক আবহের বিস্তার ঘটাতে চেষ্টা করেন। ‘আয়েশা’ নাটকেও তার সেই মনন ও চিন্তন টের পাওয়া যায় স্বতঃস্ফূর্তভাবেই। স্যালুট ফারুকী ভাই ( মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী)
‘আয়েশা’ নাটকে মোটামুটিভাবে সবারই অভিনয় ছিল সুন্দর ও সাফল্যমণ্ডিত। নাটকটি আপনাকে ভাবাবে, দেখাবে একজন অসহায় নারীর সংগ্রাম ও প্রতিবাদ। বোঝাবে ভালোবাসার জন্য, সত্য ও সুন্দরের জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রের বিরুদ্ধেও সোচ্চার হওয়া যায়। আয়েশার সাহস, সততা, ভালোবাসা সঞ্চারিত হোক, প্রস্ফুটিত হোক মানুষের বোধ ও ভাবনায়।
সেলিব্রেটিবিডি/ এনজেটি
https://www.youtube.com/watch?time_continue=3&v=_S849rIsYjI
Discussion about this post