মাদারীপুরের সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নে ছয়না গ্রামের বরিশাল খালের ওপর নির্মিত একটি কালভার্ট সেতুকে ঘিরে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। অভিযোগ রয়েছে, সেতুটি স্থানীয় ক্ষমতার প্রভাব কাজে লাগিয়ে শুধুমাত্র পুলিশের এক সাবেক ওসির বাড়িতে যাতায়াতের সুবিধার্থে নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুটি নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি হয়েছে।
সেতুটি ইটেরপুল থেকে পাথুরিয়ারপাড় সড়কের পাশে অবস্থিত।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ৩২ লাখ ৩৮ হাজার টাকা ব্যয়ে এটি নির্মাণ করে। নামফলকে ভুল তথ্য থাকা সত্ত্বেও প্রকৃত খরচ নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। অভিযোগ, জাজিরা থানার সাবেক ওসি মোস্তাফিজুর রহমান মোল্লা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তদবির করে এই সেতুটি অনুমোদন করিয়েছেন। তবে মোস্তাফিজুর রহমান এ বিষয়ে কোনো সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছেন।
এলাকার বাসিন্দারা জানান, সেতুটি শুধুমাত্র এক পরিবারের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয়। আশপাশে কোনো বসতি বা সড়ক না থাকা সত্ত্বেও এই সেতু নির্মাণ করা হয়েছে, যা সরকারী অর্থের অপচয়।
স্থানীয় বাসিন্দা সামচুল হক শিকদার বলেন, এটি সরকারের টাকার অপচয়। দুর্নীতি করে এটি নির্মাণ করা হয়েছে।
একইভাবে, পথচারী লোকমান বেপারী বলেন, অন্য কারও কোনো সুবিধা হবে না, শুধুমাত্র ওসির পরিবারের সদস্যরা এটি ব্যবহার করতে পারবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াদিয়া শাবাব জানিয়েছেন, একটি বাড়ির জন্য সেতু নির্মাণের কোনো সুযোগ নেই। প্রকল্পটি কীভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে, তা সংশ্লিষ্ট দপ্তরই ব্যাখ্যা দিতে পারবে। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এবং প্রকৌশলীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
এ বিষয়ে মোস্তাফিজুর রহমান মোল্লা দাবি করেছেন, তিনি সেতুটি নির্মাণের বিষয়ে কিছুই জানেন না।
তার বাবা আনু মোল্লার বাড়ির সামনে সেতুটি নির্মাণ হওয়ায় তিনিও অসন্তুষ্ট। তিনি ঠিকাদারের কাছে জানতে চাইলে, তারা বিষয়টি এড়িয়ে যান বলে অভিযোগ করেন।
এলাকার সাধারণ মানুষের দাবি, সেতুটি নিয়ে তদন্ত করা হোক এবং যারা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, তাদের বিচারের আওতায় আনা হোক। বিষয়টি প্রশাসনিক তদারকি এবং স্বচ্ছতার অভাবের ইঙ্গিত দেয়।
Discussion about this post