ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, ইসলামের অনেক বড় বড় জ্ঞানী ব্যক্তিরা ব্যবসার জড়িত ছিলেন। হজরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ মদিনার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ছিলেন। তাদের দেখানো পথে আলেম সমাজ এগিয়ে আসলে, তারা পরনির্ভরশীলতা থেকে মুক্তি পাবে। তাই ইমামদের ইমামতির পাশাপাশি আত্মনির্ভরশীল হতে হবে।
শুক্রবার (১ নভেম্বর) নগরের পাহাড়তলীস্থ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ অ্যাকাডেমিতে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে নিয়মিত ইমাম প্রশিক্ষণ কোর্সের ১১৬১ তম দলে প্রশিক্ষণার্থী ইমামদের সঙ্গে আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম ইমাম প্রশিক্ষণ অ্যাকাডেমির উপ-পরিচালক মো. আশরাফুজ্জামানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক বোরহান উদ্দীন মো. আবু আহসান। এছাড়াও সেখানে বিভিন্ন আলেম, ওলামা ও প্রশিক্ষণার্থী ইমামরা উপস্থিত ছিলেন।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ অ্যাকাডেমি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ইমামদের বিশুদ্ধ কোরআন তেলাওয়াত, কোরআন তাফসীর, হাদিস, আকায়েদ, ফতোয়া, ইসলাম উত্তারাধিকার আইন ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষা দিয়ে আসছে।
ইমামদের আত্মনির্ভরশীল হওয়ার জন্য ব্যবসায়ের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে, তার জন্য বিভিন্ন প্রকল্প রয়েছে। ব্যবসার জন্য আর্থিক সহায়তা লাগলে ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে ক্ষুদ্র ঋণ সহায়তা প্রদান করা হবে। এখানে কোনো সুদ নেই, শুধু কিস্তি আকারে ধাপে ধাপে পরিশোধ করবেন। তবে এ ঋণের শর্ত প্রশিক্ষিত ইমাম হতে হবে।
প্রশিক্ষিত না হলে তাকে ঋণ দেয়া হবে না।
তিনি বলেন, ব্যবসা করা কোনো দোষের না কিন্তু মজুদদারি করে কৃত্রিম সংকট তৈরির মাধ্যমে পণ্যর দাম বাড়ানো, ওজনে কম দেয়া এগুলো হারাম। আলেম সমাজ ব্যবসায়ে জড়িত থাকলে জাতি হারাম থেকে বাঁচবে।
ধর্ম উপদেষ্টা আরো বলেন, কিছু কিছু আলেম রয়েছে, যারা সারাজীবন অথবা রমজান আসলে মানুষের কাছে গিয়ে হাত পাতে; যেটা অত্যন্ত অসম্মানের কাজ। হাদিয়া দেয়া হচ্ছে সুন্নত কিন্তু নিজ থেকে চাওয়াটা অন্যায়।
অন্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকায় কোনো সম্মান নেই। নিজ উদ্যোগে হাঁস-মুরগী ও ছাগল পালন করে সেগুলো নিয়ে ব্যবসা করার মাধ্যমেই সম্মান অর্জন করা সম্ভব।
ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, সারা দেশে ৮টা সেন্টারের মাধ্যমে ইমামদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। ইমামরা সমাজের চালিকা শক্তি। সবার সঙ্গে ইমামদের ভালো সর্ম্পক রয়েছে। অবক্ষয়মুক্ত সমাজ, ধর্মীয় অনুশাসন ও মানুষকে জনসম্পদে রুপান্তর করতে ইমামদের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। তাই ইমামরা সঠিকভাবে প্রশিক্ষিত হলে সমাজের আর্থসামাজিক উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখা সম্ভব হবে।
Discussion about this post