ড. মোহাম্মদ এনামুল হোসেন, চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার উত্তর খরণার কইশ্যা পাড়া গ্রামের গর্বিত সন্তান, বিজ্ঞান ও আধ্যাত্মিকতার এক অসামান্য মেলবন্ধন প্রতিষ্ঠা করেছেন। কানাডার ডালহৌসি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি সম্পন্ন করার সময় তিনি “মেমরি কনসেপ্ট” এর উদ্ভাবন করেন, যা পেট্রোলিয়াম গবেষণায় নতুন দিক নির্দেশনা দিয়েছে।
ড. হোসেন বিশ্বাস করেন, পেট্রোলিয়াম পদার্থেরও একটি মেমরি রয়েছে, যা বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় রাসায়নিক বিক্রিয়া করতে সক্ষম। এই ধারণা তিনি পবিত্র কোরআনের সুরা হাশরের ২৪ নম্বর আয়াত থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে লাভ করেন। উক্ত আয়াতে বলা হয়েছে, “আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে, তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।”
এই আয়াতের মাধ্যমে তিনি উপলব্ধি করেন যে, সৃষ্টির প্রতিটি উপাদানের মধ্যে এক ধরণের স্মৃতি বা প্রতিক্রিয়া ধারণক্ষমতা রয়েছে, যা তাঁর গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
ড. এনামুল হোসেনের উদ্ভাবিত মেমরি কনসেপ্ট বর্তমানে ১৪টি মার্কিন পেটেন্টে রূপান্তরিত হয়েছে, যা পেট্রোলিয়াম প্রকৌশলে একটি যুগান্তকারী অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তাঁর গবেষণা শুধুমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক নয়, এটি তরুণ বিজ্ঞানীদের জন্য একটি অনুপ্রেরণার উৎস।
পেশাগত জীবনে অধ্যাপক হোসেন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। যার মধ্যে সুলতান কাবুস ইউনিভার্সিটি, ওমান, কিং ফাহদ ইউনিভার্সিটি অব পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মিনারেলস (KFUPM), সৌদি আরব, মেমোরিয়াল ইউনিভার্সিটি, কানাডা এবং আমেরিকান ইউনিভার্সিটি ইন কায়রো, মিশর। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন এবং ১০০ এর অধিক ছাত্রছাত্রীকে মাস্টার্স এবং পিএইচডি ডিগ্রী প্রদান করেন। তিনি কানাডার মেমোরিয়াল ইউনিভার্সিটির একমাত্র স্টেট অয়েল চেয়ার প্রফেসর হিসাবে কর্মরত ছিলেন
। তাছাড়া, তিনি “আজিজা ট্রাস্ট” প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষার সুযোগ করে দিচ্ছেন, যা তাঁর মানবিক গুণাবলীর উজ্জ্বল প্রমাণ।
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ এনামুল হোসেনের গবেষণা, উদ্ভাবন এবং মানবসেবামূলক কাজগুলো প্রমাণ করে যে, বিজ্ঞানের সাথে আধ্যাত্মিকতা এবং মানবসেবা একসাথে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।
Discussion about this post