ক্রিকেট ছেড়ে কী করবেন তামিম ইকবাল! কেউ বলছেন কোচ কেউ বলছেন ধারাভাষ্যকার। বর্তমানে ভারতে বাংলাদেশের টেস্ট সিরিজে ধারাভাষ্যও দিচ্ছেন তিনি। প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে কি তিনি এই পেশাই বেছে নিতে যাচ্ছেন! সেইসঙ্গে প্রশ্ন হচ্ছে তিনি অবসরে যাবেন কবে? তবে বেশ কিছুদিন থেকেই গুঞ্জন তামিম হতে যাচ্ছেন বিসিবি’র পরিচালক। প্রশ্ন সেটি কীভাবে? ক্লাব কোটাতে কাউন্সিল হয়ে নির্বাচক করে আসা বেশ সময় সাপেক্ষ বিষয়।
আবার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে মনোনীত কাউন্সিলও তাকে দেয়া হবে কিনা সেটি নিয়েও আছে প্রশ্ন। তবে বেশ কয়েকটি অনুসন্ধানে জানা গেছে, নিজ বিভাগ চট্টগ্রাম থেকে কাউন্সিল হয়েই তিনি হবে বিসিবি’র পরিচালক।
তবে সেটি আগমী বছর অক্টোবরে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচনের মধ্যদিয়ে। এ সময়ে তিনি মাঠে খেলবেন। জানা গেছে, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ছাড়াও তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও খেলার কথা। আর সেটি হতে পারে আগামী বছর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। এরপরই তিনি দিতে পারেন অবসরের ঘোষণা। ততদিনে গঠিত হয়ে যাবে নয়া বিভাগীয় ও জেলা কমিটিও।
যদিও বিসিবি’র নয়া সভাপতি ফারুক আহমেদ তার বোর্ড পরিচালক হতে চাওয়ার বিষয়টি জানেন না বলেই এড়িয়ে গেছেন। দৈনিক মানবজমিনকে তিনি বলেন, ‘না, তামিম বিসিবি পরিচালক হবে এটি এখনো বলতে পারছি না। আমি তো বলেছি যে আমার ব্যক্তিগত চাওয়া সে মাঠে ফিরুক আগে।’
তবে চট্টগ্রামের ক্রীড়া সংগঠকদের সঙ্গে আলোচনা করে জানা গেছে, তামিম বিসিবি পরিচালক হতে ইচ্ছুক। এবং সেটি নিজ বিভাগ থেকেই কাউন্সিলর হয়ে। যেখান থেকে বর্তমানে বিসিবিতে পরিচালক হয়ে এসেছেন তার চাচা আকরাম খান। চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিরাজউদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীর অবশ্য তামিমের পরিচালক হিসেবে আসার ইচ্ছার কথাটি শুনেছেন বলে স্বীকার করে নিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি শুনেছি তামিমের ইচ্ছা আছে বিসিবি পরিচালক হওয়ার। তিনি এই বিভাগ থেকেই কাউন্সিলর হয়ে পরিচালক হতে চান এটাও আমি শুনেছি।’ তবে সরকার পতনের পর সারা দেশেই জেলা ও বিভাগীয় কমিটিগুলো ভেঙে দেয়া হয়েছে। গঠন করা হয়েছে অ্যাডহক কমিটি। এখানে পদাধিকার বলে জেলার অ্যাডহক কমিটির প্রধান জেলাপ্রশাসক ও বিভাগের হলেন বিভাগীয় কমিশনার। তারাই নির্বাচন করে গঠন করবেন ২১ সদস্যের জেলা ও বিভাগীয় কমিটি। তবে এই কমিটির কেউই কাউন্সিল হতে পারবেন না।
তারা সবাই কাউন্সিল নির্বাচিত করবেন বলেই জানা গেছে। সেখানে চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে কাউন্সিল হিসেবে আসতে পারে তামিম ইকবালের নাম! সেই সঙ্গে এও জানা গেছে, তিনি পরিচালক হয়ে দায়িত্ব পেতে পারেন ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের। তবে একটি সূত্রের দাবি পরিচালক হলেও খুব সহজেই তাকে এত বড় দায়িত্ব নাও দেয়া হতে পারে। তবে যাই হোক আগামী বিসিবি নির্বাচনে অংশ নিতে হলে ক্রিকেটকে বিদায় বলতেই হবে।
বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের দায়িত্ব পাওয়ার এক মাস পূর্ণ হয়েছে গেল শনিবার। তার হাতে বিসিবি সংস্কারের বড় একটি দায়িত্ব। যেখানে গঠনতন্ত্র থেকে শুরু করে নির্বাচনের মতো বড় কাজই তার হাতে রয়েছে। বিসিবি’র নয়া কমিটি গঠনে নির্বাচন হওয়ার কথা আগামী বছর অক্টোবরে।
অনেকটা সময় বাকি হলেও সভাপতির চিন্তা তো আছেই। নির্বাচন ভাবনা নিয়ে ফারুক আহমেদ বলেন, ‘আগামী জেলা ও বিভাগীয় কমিটিগুলো গঠন হোক। এরপর আমরা নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হবো। তার আগে তো এটি নিয়ে কাজ করার সুযোগ নেই। অনেক জায়গাতেই সংস্কার প্রয়োজন।’
তবে গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল বিসিবি বর্তমান কমিটি ভেঙে গঠন করা হবে অ্যাডহক কমিটি। তারাই গঠনতন্ত্র সংশোধনসহ নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। তবে বিসিবি’র নয়া সভাপতি জানিয়েছেন অ্যাডহক কমিটির ভাবনা এখন তাদের নেই। তিনি বলেন, ‘না অ্যাডহক কমিটি হবে না। আমরা বর্তমানে যে পরিচালকরা আছি তাদের নিয়ে কাজ চালিয়ে যাবো।’
অন্যদিকে জেলা ও বিভাগীয় কমিটিগুলো গঠন করা নিয়ে বেশ চাপের মুখে ক্রীড়া পরিষদের গঠন করে দেয়া অ্যাডহক কমিটিগুলো। রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ নানা ধরনের মানুষই কমিটিগুলোতে আসতে মরিয়া। তারা প্রতিনিয়তই নিয়ে আসছে নানা তদবির।
যে কারণে গোটা দেশেই জেলা ও বিভাগীয় কমিটি গঠনে কাজও হয়েছে হ-য-ব-র-ল! এ ছাড়াও বিসিবি’র পরিচালকদের বেশির ভাগই ক্লাব পরিচালকদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে এসেছে। তবে এবার সরকার পতনের পর বেশির ভাগ ক্লাবের পরিচালকরা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।
আবার কেউ কেউ আছেন আত্মগোপনে। তাই বিসিবি’র কাউন্সিল তালিকা চূড়ান্ত করাও হবে বেশ জটিল ও সময় সাপেক্ষ।
Discussion about this post